পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইউরোপে তিনমাস
২৬৭

সামাজিক জীবন দেখিয়া বোধ হইয়াছিল, আমেরিকার শ্বেতাঙ্গ অপেক্ষা ইংলণ্ডের শ্বেতাঙ্গেরা বেশী সভ্য ও সুখী। ইহাঁদের পারিবারিক প্রথা ও গৃহস্থালী আমার নিকট আদর্শ জীবনযাপন প্রণালী মনে হইত। ইহাঁরা সুখে স্বচ্ছন্দে থাকিতে জানেন। কলের মত ইহাঁদের কাজকর্ম্ম সম্পন্ন হয়।

 এদেশের চাকরেরাও বেশ ভদ্রতা জানে। আমেরিকায় ভৃত্য ত পাওয়াই যায় না। আর তাহারা মনিবগণকে সম্মান আদৌ করে না। আমেরিকার চাকরেরা বুঝে যে, তাহারা দুই চারি বৎসরের ভিতরই হয় ত মনিব হইয়া পড়িবে! ইংলণ্ডের চাকরেরা চিরজীবন চাকরই থাকিবে, সুতরাং বড় আকাঙ্ক্ষা তাহাদের নাই। কোন্ নিয়ম ভাল? তাহার উত্তর এ যাত্রায় আর দিলাম না।

 ইংলণ্ডের লোকেরা আইন ও শাসনের নিয়মগুলি সম্মান করিয়া চলে। অতি সহজেই এখানে বড় বড় কাজ নিষ্পন্ন হইয়া যায়। ইংরাজজাতি কিছু বেশী ধীর—সকল কাজেই ইহারা সময় অধিক লইয়া থাকে। ইহাদের খানা খাইতে খুব বেশী সময় লাগে। স্থিতিশীল ইংরাজের উল্টা আমাদের আমেরিকার ইয়াঙ্কি। ইয়াঙ্কিরা বড়ই তড়বড়ে—২৪ ঘণ্টা চলাফেরা করিতেছে—সর্ব্বদাই উদ্বিগ্ন, শশব্যস্ত—চুপ করিয়া অথবা সময় বেশী খরচ করিয়া কোন কাজ ইহারা করিতে জানে না। কিন্তু স্থিতিশীল ইংরাজেরা গতিশীল ইয়াঙ্কি অপেক্ষা মোটের উপর কম কাজ করে কি?