পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

বিশ্ব-বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি হইতে হইলে শুনিয়াছি ছাত্রদের যথেষ্ট, ‘বেগ’ পাইতে হয়। যাহারা ‘প্রবেশিকা’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া হার্ভার্ড ও ইয়েলের কলেজে লেখাপড়া শিখিবার জন্য সার্টিফিকেট পায়, তাহারা বোধ হয় আমার এই দিনের আনন্দ কিছু কিছু অনুমান করিতে পারিবে। আমিও পরে অনেক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছি। কিন্তু এই পরীক্ষার উপরই আমার ভাগ্য নির্ভর করিতেছিল। ইহার ফলেই আমার জীবনের গতি নির্দ্ধারিত হইল। এরূপ অগ্নিপরীক্ষায় আর আমি কখনও পড়ি নাই।

 হ্যাম্পটনের প্রধান শিক্ষয়িত্রী, আমার পরীক্ষাকর্ত্রীর নাম ছিল কুমারী মেরী এফ্ ম্যাকি। আমাকে নিজের খরচ নিজেই চালাইতে হইবে শুনিয়া তিনি আমাকে বিদ্যালয়ের একটা খান্সামার কাজ করিতে দিলেন। আমাকে ঘরগুলি দেখিতে শুনিতে হইত, খুব সকালে উঠিয়া বাড়ীর আগুন জ্বালিয়া দিতে হইত। উনন ধরাইয়া দিতে হইত। খাটুনী যথেষ্ট ছিল, কিন্তু ইহাতে আমার ভরণপোষণের প্রায় সমস্ত খরচই পাইতাম।

 হ্যাম্পটন বিদ্যালয়ের বহির্দৃশ্য পূর্ব্বে বর্ণনা করিয়াছি। এক্ষণে ভিতরকার কথা কিছু বলি। মিস্ ম্যাকি আমার জননীর ন্যায় স্নেহশীলা ছিলেন। তাঁহার সাহায্যে ও উৎসাহে আমি সেখানে অনেক উপকার পাইয়াছি। তাঁহাকে আমার জীবনের অন্যতম গঠনকর্ত্রী বিবেচনা করিয়া থাকি।

 একজন শ্বেতাঙ্গ পুরুষের পরিচয় আমি এখানে পাই। তখন হইতে তিনি আমার হৃদয়-সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হইয়া আছেন।