পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

মহোদয় একজন ইয়াঙ্কি বন্ধুকে বলিয়া আমার বেতন দেওয়াইতেন। বন্ধুটির নাম এস্ গ্রিফিথ্‌স্ মরগ্যান্। শ্রীযুক্ত মরগ্যান্ আমার হ্যাম্পটনের পুরাপুরি বেতন দিয়া আসিয়াছেন। আমি পরে যখন টাস্কেজীতে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি—তখন কয়েকবার এই সহৃদয় দাতার সঙ্গে দেখা করিয়া ধন্য হইয়াছি।

 হ্যাম্পটনে পুস্তকাভাব ও বস্ত্রাভাব যথেষ্ট হইল। পুস্তক অবশ্য পরের নিকট ধার করিয়া লইলেই কাজ চলে। এই রূপেই আমার চলিত। কিন্তু পোষাক পাই কোথায়? সে থলের মধ্যে আমার যা কিছু সম্পত্তি তাহাতে ত এখানে চলা অসম্ভব। বিশেষতঃ সেনাপতি মহোদয় কাপড় চোপড়ের উপর বিশেষ দৃষ্টিই রাখিতেন কোন ছাত্রের জামার বুতাম নাই দেখিলে তিনি অসন্তুষ্ট হইতেন। জুতা বেশ কালী বা রং করা না দেখিলে তাঁহার বিরক্তি জন্মিত। কোটে কালীর দাগ থাকিলে কোন ছাত্র তাঁহার নিকট আসিতে ইতস্ততঃ করিত। আমার মাত্র একটি পোষাক। তাহা দ্বারাই খান্সামাগিরি ও ছাত্রগিরি করিতে হইবে। চব্বিশ ঘণ্টা এক পোষাক ব্যবহার করিয়া কি তাহা পরিষ্কার রাখা যায়? আমার অবস্থা দেখিয়া শিক্ষক মহোদয়গণের দয়া হইল। তাঁহারা আমাকে পুরাতন জামা পোষাকের বস্তা হইতে একটা পোষাক দান করিলেন। এই পুরাতন বস্ত্রগুলি যুক্তরাজ্যের ইয়াঙ্কি অঞ্চল হইতে হ্যাম্পটনের দরিদ্র ছাত্রগণের জন্য দানস্বরূপ পাওয়া যাইত। বস্ত্র দানের এইরূপ ব্যবস্থা না থাকিলে আমার মত অসংখ্য বালক বিদ্যালাভে বঞ্চিত হইত সন্দেহ নাই।