পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

বহু লোকেই পাইতে লাগিল! দুই তিন দিন স্কুলে আসিবার পর দেখিতাম ছাত্রেরা চলিয়া যাইতেছে। অনুসন্ধান করিলে বুঝা যাইত—তাহারা ‘আদেশ’ পাইয়া ধর্ম্মগুরুর কার্য্যে ব্রতী হইয়াছে। এই ‘আদেশ’ পাওয়া ব্যাপারটা বড়ই রহস্যজনক। গির্জাঘরে লোকজন বসিয়া আছে এমন সময়ে একব্যক্তি হঠাৎ মেজের উপর পড়িয়া যাইত। বহুক্ষণ নিষ্পন্দ অসাড় ও বাক্‌শক্তিহীন অবস্থায় থাকিত। অমনি পাড়ায় সাড়া পড়িয়া যাইত, অমুক ব্যক্তির ‘আদেশ’ হইয়াছে। তাহার পর হইতেই সে ধর্ম্মগুরু! এইরূপ ‘দশায়’ পড়া প্রায় প্রত্যেক নিগ্রোপল্লীতে প্রতি সপ্তাহেই দুই চারিটা ঘটিত। আমি এই ‘দশায়’ পড়া ব্যাপারটাকে বুজরুকি মনে করিতাম। আমার ভয় হইত পাছে আমিও বা কোন দিন দশায় পড়িয়া ভগবানের আদেশ পাইয়া বসি। আমার সৌভাগ্য আমি সেরূপ আদেশ পাইবার অবস্থা কাটাইয়া উঠিয়াছি।

 সমাজে ধর্ম্মগুরুর সংখ্যা যারপরনাই বাড়িতে থাকিল। একটা ধর্ম্মমন্দিরের কথা আমার মনে আছে—তাহার অন্তর্গত খৃষ্টধর্ম্মাবলম্বী লোক সংখ্যাই ছিল সর্ব্বসমেত ২০০ জন মাত্র। অথচ তাহার ধর্ম্মপ্রচারক সংখ্যাই প্রায় ২০। আজকাল নিগ্রোসমাজে ধর্ম্মের অবস্থা অনেকটা উন্নত হইয়াছে। দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষ্ণাঙ্গ জাতি যথেষ্ট নৈতিক শক্তি লাভ করিতেছে। ‘দশায়’ পড়া এবং ‘আদেশ’ পাওয়ার হুজুগ অনেক কমিয়া আসিয়াছে। আর ৩০।৪০ বৎসর পরে আমাদের আরও উন্নতি হইবে আশা করিতেছি।