পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যুগ
৯১

হইতেছে। আমি বুঝিলাম এ ব্যবস্থা বেশী দিন টিকিবে না। শীঘ্রই উহার পরিবর্ত্তন অবশ্যম্ভাবী।

 জোর করিয়া আমাদিগকে দক্ষিণপ্রান্তের শ্বেতাঙ্গমহলে কর্ত্তামি করিতে দিলে আমাদের বর্ত্তমান অহঙ্কার বাড়িতে পারে কিন্তু ভবিষ্যতের পক্ষে আমাদের সমূহ ক্ষতি। কারণ এই লোভে পড়িয়া আমরা আমাদের যথার্থ উন্নতির ভিত্তি প্রতিষ্ঠা হইতে দূরে সরিয়া পড়িতে পারি আশঙ্কা আছে।

 কৃষি শিল্প ও ব্যবসায়ে লাভবান্ হইয়া সম্পত্তির মালিক না হইলে কখনও কি প্রকৃত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ভোগ করা যায়? না রাষ্ট্রজীবনে প্রভাব বিস্তার করা যায়? টাকা পয়সা গৃহ-সম্পত্তি ইত্যাদির অধিকারী হইবার জন্য চেষ্টা করাই তখন আমাদের সর্ব্বপ্রধান কর্ত্তব্য ছিল। অধিকন্তু লেখা পড়া না শিখিলেই বা রাষ্ট্রীয় জীবনের কর্ত্তব্য পালন করিব কি করিয়া? রাষ্ট্রজীবনের জন্য দায়িত্ববোধ পুষ্ট করিবার পক্ষে বিদ্যালাভই প্রধান সহায়। সুতরাং শিক্ষালাভ ও সম্পত্তিলাভ এই দুই দিকে মন না দিয়া আমরা যদি হুজুগে পড়িয়া দক্ষিণপ্রান্তের শ্বেতাঙ্গসমাজে বড় বড় চাকরী করিতে থাকিতাম, তাহা হইলে আমাদের ভবিষ্যৎ উন্নতির মূলে কুঠারাঘাত হইত আমি ইহা বেশ বুঝিতাম। এই জন্যই উত্তর অঞ্চলের শ্বেতাঙ্গদিগের মেজাজ দেখিয়া আমি একেবারেই খুসী হই নাই। আর আমার মনে বেশ ধারণা জন্মিয়াছিল যে, নিগ্রোজাতিকে যে অস্বাভাবিক ভাবে চালাইবার চেষ্টা হইতেছে তাহা কোনমতেই টিকিতে পারে না।