পাতা:নির্জ্জন গৃহকোণে.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নি জঁ ন গৃহ কোণে জন্ত মনে মনে মলিনার অনুশোচনার আর সীমা নেই। দশ বছর ওদের বিয়ে হয়েছে, কিন্তু এ দীর্ঘ বিবাহিত জীবনের মধ্যেও শৈলপতির আবির্ভাব মলিনার কাছে প্রথম দিনের মতো নিবিড় অনুভূতির স্বষ্টি করে, শৈলপতির আশঙ্কাকরুণ স্নিগ্ধ স্পর্শের সমুদ্রে মুষ্ঠিত হয়ে পডে মলিনা আনন্দময় উদ্দেশ্যহীনতায় । সুদীর্ঘ অন্তরঙ্গ তার পরও শৈলপতির ক্ষিপ্র এবং তীক্ষ্ণ দেহবঙ্কিমার দিকে বুভূক্ষিতের মতে চেয়ে থাকে মলিনা, সারা দেহমনে কি সুতীব্র অনুভূতি । মৃত সস্তানের মুখে দুগ্ধভারাবন ত পাবর স্তন দিয়ে মলিনা একদিন হৃদয়ে যে বেদন অনুভব করেছিল, আজও মাঝে মাঝে সেই বেদন ওকে বিহবল করে তোলে, শরীরের যা কিছু শ্রেষ্ঠ সম্পদ সব আজ ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছে। বুকের ব্যথা একটু কম পড়লেই মলিনা মনে করে এইবার সে সেরে উঠবে, আর কষ্ট পাবে না, কিন্তু কতক্ষণ ! অথণ্ড স্তব্ধতার মাঝে নির্জন গৃহের এই নিরালা কোণে শুয়ে মলিন বুকের চারপাশে রুগ্ন আঞ্জুলগুলি সঞ্চারিত করে একটু শাস্ত হতে চায়, কিন্তু ধীরে ধীরে আবার ব্যথায় যন্ত্রনায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। যন্ত্রনার বিভীষিকায় ছিন্ন হয়ে যায় মলিনার অন্তর—সারা দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেন অকস্মাৎ বন্ধনমুক্ত হয়ে বিচ্ছিন্ন হতে চায় । মলিন নিশ্চল হয়ে পড়ে থাকে, নড়বার শক্তি নেই। ক্রমশ: রাহু-মুক্ত চন্দ্রের মতো মলিনার বেদনার প্রকোপ কমে আসে, মলিন ভাবে, একাকী এই ঘরের নির্জন কোণে এইবার হয়ত সে মরে যাবে, দেয়ালে জলবে প্রখর স্বৰ্য্যালোক, নদীতে বইবে উচ্ছল জোয়ার । যদি সে মরতে পারতো, অন্ততঃ সে এই যন্ত্রণা ও বিভীষিকার হাত থেকে মুক্তি পেত। আর কতদিন ! S