পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একাদশ পরিচ্ছেদ ፭ግ মাসিক আট আনা কাটিয়া লইতেন। বাকি চাের আনার উপর নির্ভর করিয়া আমাদের সংসার যাত্রা নিৰ্বাহ করিতে হইত। কিছুদিন পরে জেলের মধ্যে একটা ছাপাখানা স্থাপিত করিয়া বারীদ্রের উপর তাহার তত্ত্বাবধানের ভার দেওয়া হয়। আর হেমচন্দ্ৰকে বই-বাধাই বিভাগের অধ্যক্ষ করিয়া দেওয়া হয়। সেই সময় সুপারিনটেনডেন্ট সাহেব। উহাদের প্রত্যেককে মাসিক ৫২ টাকা করিয়া ভাতা দিবার জন্য চিফ-কমিশনারের অনুমতি চান । পাচ টাকার নাম শুনিয়াই চিফ কমিশনার লাফাইয়া উঠিলেন। কয়েদীর মাসিক ভাতা পাচ-টা-কা! আরে বাপ ! তাহা হইলে ইংরেজ রাজ যে ফতুর হইয়া যাইবে! অনেক লেখালিখির পর মাসিক একটাকা করিয়া বরাদ্দ হইল। "যথা লাভ ! ক্ৰমে ক্ৰমে আমাদের রান্নাঘরের পাশে একটী ছোট পুদিনার ক্ষেত দেখা দিল ; তাহার পর দুই চারিটা লঙ্কা গাছ, এক আধটা বেগুন গাছ ও একটা কুমড়া গাছও আসিয়া জুটল। এ সমস্ত শাস্ত্ৰবিরুদ্ধ ব্যাপার ঘটতে দেখিয়া জেলার মাঝে মাঝে তাড়া করিয়া আসিত ; কিন্তু সুপারিনটেনডেণ্টের মনের এক কোণে আমাদের উপর একটু দয়ার আবির্ভাব হইয়াছিল । তিনি এ সমস্ত ব্যাপার দেখিয়াও দেখিতেন না । জেলারের প্রতিবাদের উত্তরে বলিতেন—‘এরা যখন চুপ চাপ করে আছে, তখন এদের আর পিছু লেগে না।” এরূপ দিয়া প্ৰকাশের গ কারণও ঘটয়াছিল। কর্তৃপক্ষের আটঘাট বন্ধ রাখিবার শত চেষ্টা সত্ত্বেও | মাঝে মাঝে দেশের খবরের কাগজে তাঁহাদের কীৰ্ত্তিকাহিনী প্ৰকাশ হইয়া পড়িত। তাহাতে র্তাহাদের মেজাজটা প্ৰথম প্ৰথম বিলক্ষণই উগ্ৰ হইয়া উঠিত ; কিন্তু শেষে অনেকবার ঠেকিয়া ঠেকিয়া র্তাহারাও শিখিয়াছিলেন যে কয়েদীকেও বেশী ঘাটাইয়া লাভ নাই। মেজাজ একটু ঠাণ্ড হইবার প্রবলতর কারণ জৰ্ম্মানীর সহিত