পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নির্বাসিতের আত্মকথা د حط ډ এতগুলা ছেলেকে ক্রমশঃ মরণের মুখে ঠেলিয়া লইয়া চলিয়াছি, মরণের , ভয়টা কি আমাদের নিজেদের মন হইতে সত্যসত্যই মুছিয়া গিয়াছে ? আর তাও যদি হয়, তা দিনের পর দিন অন্ধের মত ছেলেগুলোকে কোথায় টানিয়া লইয়া যাইব ? পথ যে নিজেদের চোখেই ক্রমশঃ অন্ধকার হইয়া উঠিতেছে! বারীনের মনে এ সময় কি হইত। ঠিক জানিনা । কোন দুঃসাহসের কাৰ্য্যে তাহাকে এ পৰ্যন্ত কখনও ভয়ে পিছাইতে দেখি নাই। তবে সেও যেন মাঝে মাঝে নিজের ভিতর ঢুকিয়া শক্তি সংগ্রহের জন্য ব্যাকুল হইয়া উঠিত বলিয়া মনে হয়। একটা কিছুর উপর নির্ভর করিয়া নিশ্চিন্ত হইতে পারিলে আমাদের কাধের বোঝাটা যেন একটু হালকা হইয়া যাইত। এই জন্যই বোধ হয় ষে সাধুটীর নিকট গুজরাতে সে দীক্ষা লইয়া ছিল তঁহাকে এই সময় একবার বাংলাদেশে আসিবার জন্য সে অনুরোধ করিয়া পত্র লেখে । ১৯০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সাধুটী মানিকতলার বাগানে আসিয়া উপস্থিত হন। দুই চারিদিন আমাদের সমস্ত ব্যাপার দেখিয়া তিনি ‘বলিলেন-“তোমরা যে পন্থা ধরিয়াছ, তাহা ঠিক নহে। অশুদ্ধ মন লইয়া এ কাজে লাগিলে খানিকটা অনর্থক খুনোখুনির সম্ভাবনা। এ . অবস্থায় যাহারা দেশের নেতৃত্ব করিতে চায় তাহদের অন্ধের মত কাজ করা চলিবে না। ভবিষ্যতের পরদা ঘাঁহাদের চােখের কাছ থেকে কতকটা সরিয়া গিয়াছে, ভগবানের নিকট হইতে র্যাহারা প্ৰত্যাদেশ পাইয়াছেন, তাহারাই এ কাজের যথার্থ অধিকারী। তোমাদের মধ্যে জন কয়েককে এই প্রত্যাদেশ পাইবার জন্য সাধনা করিতে হইবে।” “ সাধনার ফরমাইস শুনিয়া ছেলেরা মুখ চাওয়া চাওয়ি করিতে লাগিল। প্ৰত্যাদেশ না অশ্বডিম্ব ! ইংরেজের সহিত যুদ্ধ করিব, তাহার মধ্যে আবার ভগবানকে লইয়া এত টানাটানি কেন ?