পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ GS তাহাই ছিল। দুই একদিনের মধ্যেই সর্বসম্মতিক্রমে তিনি সাধারণের “হেমন্দা” হইয়া দাড়াইলেন। আমাদের পাশের দুইটি ঘরে লেখাপড়া ও ধৰ্ম্মালোচনা চলিতে লাগিল ; আর আমাদের ঘরটীি হইয়া উঠিল নাচ, গান, হাসি, ঠাট্টা, তামাসা ও চিমটি কাটাকাটির কেন্দ্ৰ। বলা বাহুল্য উল্লাসকর আমাদের সহিত একত্রই ছিল । সে না থাকিলে আসর জমিত না । আমরা বাড়ীঘর ছাড়িয়া যে জেলে আসিয়াছি হট্টগোলের মধ্যে সে কথা মনেই হইত না দিন কয়েক পরে সুখের মাত্রা আরও এক পর্দা চড়িয়া গেল। বাহির হইতে পুলীিস আরও কয়েক জনকে ধরিয়া আনিল । মোট আমরা প্ৰায় ৪০৷৪৫ জন হইলাম। এত লোককে তিনটা কুঠরীর মধ্যে পুরিতে গেলে অন্ধকূপহত্যার পুনরাভিনয় করিতে হয় ! ডাক্তার সাহেব বলিলেন যে, একটা ওয়ার্ড খালি করিয়া আমাদের সকলকে সেখানে রাখা হোক । কাজেকাজেই সকলে আসিয়া একসঙ্গে মিশিলাম। নরক একেবারে গুলজার হইয়া উঠিল। জেলের খাওয়া সম্বন্ধে নানারূপ অভিযোগ করায় ডাক্তায় সাহেব আমাদের জন্য বাহির হইতে ফল মূল বা মিষ্টান্ন পাইবার ব্যবস্থা করিয়া দিয়াছিলেন। সুশীল সেনের পিতা প্ৰায়ই আম, কঁঠাল ও মিষ্টান্ন পাঠাইয়া দিতেন। কলিকাতার অনুশীলন সমিতির ছেলেরাও মাঝে মাঝে ঘি চাল, মসলা ও মাংস পঠাইয়া দিত। সর্ববিদ্যাসিদ্ধ “হেমন্দা” সেগুলি হাসপাতালে লইয়া গিয়া পোলাও বানাইয়া আমাদের ভুরি-ভোজনের ব্যবস্থা করিয়া দিতেন। আম কঠাল এত অধিক পরিমাণে আসিত যে খাইয়া শেষ করা দায় হইত; সুতরাং সেগুলি পরস্পরের মুখে ও মাথায় মাখাইয়া সদ্ব্যবহার করা ভিন্ন উপায়ান্তর ছিল না। । সন্ধার সময় গানের আজ্ঞা বসিত। হেমচন্দ্র, উল্লাসকর, দেবব্রত কয়