পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম পরিচ্ছেদ ৷ ” VGd কখনও বা চুপ করিয়া পড়িয়া থাকিত। আমি উভয় দলেরই রসাস্বাদন করিয়া ফিরিতাম । এই হট্টগোল ও দলাদলির মধ্যে একেবারে নিশ্চল স্থানুর মত বসিয়া {াকিতেন—অরবিন্দ বাবু। কোন কথাতেই হ, না, কিছুই বলিতেন না । জেলের প্রহরীদের নিকট হইতে র্তাহার আচরণ সম্বন্ধে অদ্ভুদ অদ্ভুদ গল্প শুনিতে পাইতাম। কেহ বলিত তিনি রাত্ৰে নিদ্রা যান না, কেহ। বলিত তিনি পাগল হইয়া গিয়াছেন ; ভাত খাইবার সময় আর সুলা, টিকটিকি ও পিপড়াদের ভাত খাইতে দেন ; স্নান করেন না, মুখ ধোন না, কাপড় ছাড়েন না-ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্যাপারটা জানিবার জন্য বড় কৌতুহল হইত ; কিন্তু তাহাকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করিবার সাহস কুলাইত না । মাথায় মাখিবার জন্য আমরা কেহই তেল পাইতাম না ; কিন্তু দেখিতাম যে অরবিন্দ বাবুর চুল যেন তেলে চক্‌চক্‌ করিতেছে। একদিন সাহসে ভর করিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম-“আপনি কি স্নান করিবার সময় মাথায় তেল দেন ?” অরবিন্দ বাবুর উত্তর শুনিয়া চমকিয়া গেলাম। তিনি বলিলেন-“আমি ত স্নান করি না ।” জিজ্ঞাসা করিলাম —“আপনার চুল অত চক্‌চক করে কি করিয়া ?” অরবিন্দ বাৰু বলিলেন- ‘সাধনের সঙ্গে সঙ্গে আমার শরীরে কতকগুলা পরিবর্তন হইয়া যাইতেছে। আমার শরীর হইতে চুল বসা (fat) টানিয়া লয়।” দুই একজন সন্ন্যাসীর ওরূপ হইতে দেখিয়াছি ; কিন্তু ব্যাপারটা ভাল করিয়া বুঝি নাই। তাহার পর ডকের মধ্যে একদিন বসিয়া থাকিতে থাকিতে লক্ষ্য করিলাম যে অরবিন্দী: বাবুর চক্ষু যেন কাচের চক্ষুর মত স্থির হইয়া আছে; তাহাতে পলক বা চাঞ্চল্যের লেশ মাত্র নাই। কোথায় পড়িয়ছিলাম যে চিত্তের বৃত্তি একেবারে নিরুদ্ধ হইয়া গেলে চক্ষে ঐ রূপ লক্ষণ প্ৰকাশ পায়। দুই একজনকে তাহা দেখাইলাম ; কিন্তু কেহই