পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՀ নির্বাসিতের আত্মকথা বিজ্ঞাপ ও যুক্তিতর্কের তীক্ষ্মবাণে বিদ্ধ করিয়া যেদিন আমার ভগবানটীকে / নিহত করেন। সে দিনের কথা আমার এখনও বেশ মনে পড়ে । এই বিশাল মায়ার সমুদ্রের মাঝখানে একাকী ডুব সাতার কাটতে কাটতে একেবারে হিমাঙ্গ হইয়া ওপারে নির্বিকল্প সমাধিতে উঠিতে হইবে ভাবিয়া আমার রক্ত একেবারে শীতল হইয়া গিয়াছিল । নির্বিকল্প সমাধির মধ্যে ডুব দিয়া চুপ করিয়া পড়িয়া থাকার নামই মুক্তি-এ তত্ত্ব আমার মাথার মধ্যে বেশী দিন রহিল না । চরম তত্ত্ব বলিয়া একটা কিছু মানুষ আপনার জ্ঞানের মধ্যে পাইয়াছে কিনা সে বিষয়েও সন্দেহ উপস্থিত হইল। মনে হইতে লাগিল নির্বিকল্প সমাধি হইতে আরম্ভ করিয়া জাগ্ৰত অবস্থা পৰ্য্যন্ত সব অবস্থাগুলাই অনন্তের এক একটা দিক মাত্ৰ ; এ দুই অবস্থার উপরে ও নীচে এরূপ অনন্ত অবস্থা পড়িয়া আছে। সেই অনন্তের মধ্যে এমন একটা কিছু সত্য আছে যাহা মানুষের জীবনে কৰ্ম্ম রূপে আপনাকে অভিব্যক্ত করিতে চেষ্টা করিতেছে। সুতরাং জীবনকে ছাড়িয়া পলাইতে যাইব কেন ? কৰ্ম্ম সমাধির চেয়ে কিসে ছোট ? কৰ্ম্মকেই জীবনের শ্রেষ্ঠ উদ্দেশ্য করিয়া স্বদেশী আন্দােলনে যোগ দিয়াছিলাম। শ্ৰীযুক্ত লেলে আসিয়া যখন আমাদের মধ্যে ভক্তিমূলক সাধনা প্ৰবৰ্ত্তিত করিতে চেষ্টা করেন তখন মহাবিজ্ঞের ন্যায় তাহার ভক্তিবাদকে হাসিয়া উড়াইয়া দিয়াছিলাম। সবটাই যখন সেই অনন্তের মূৰ্ত্তি তখন ভগবানের যে রূপ জগতে মূৰ্ত্ত তাহা ছাড়িয়া অন্য রূপ ধান করিবার সার্থকতা কি ? লেলে তখন শুধু এই কথাটী বলিয়াছিলেন“যাহা বলিতেছ। তাহা যদি বুঝিয়া থাক, তাহা হইলে আর আমার বুঝাইবার কিছু নাই; কিন্তু অদ্বৈতের মধ্যে দ্বৈতেরও স্থান আছে, এ কথা ভুলিও না।” আজ যখন বিধাতা জোর করিয়া কৰ্ম্মক্ষেত্ৰ হইতে অপসারিত করিয়া