পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ8 নির্বাসিতের আত্মকথা খাইত তাহদের জন্য একজন ইউরোপীয় প্রহরীকে পকেটে করিয়া কলা লুকাইয়া আনিতে দেখিয়াছি। চুপি চুপি কলা খাওয়াইয়া বেচারা পকেটে পুরিয়া খোসাগুলি বাহিরে লইয়া যাইত । একজন লম্বা চৌড়া হাইল্যাণ্ডর প্রহরী মাঝে মাঝে আমাদের জালাতন করিয়া আপনার প্রহরী জন্ম সার্থক করিত। আমরা তাহার নাম দিয়াছিলাম “Rufian warder”। মাঝে মাঝে সে আমাদের বক্তৃতা দিয়া বুঝাইয়া দিত যে সে ও তাহার স্বজাতিরা ভারতবর্ষকে সভ্য করি।-- বার জন্য এখানে আসিয়াছে। কিন্তু সকলের চেয়ে মিষ্ট্রমুখ শয়তান ছিল চিফ ওয়ার্ডার স্বয়ং। সে আবার মাঝে মাঝে ধৰ্ম্মের তত্ত্বকথাও আমাদের শুনাইত ; এবং আশা দিত যে জীবনের বাকি কয়টা দিন। সৎ হইয়া চলিলে স্বৰ্গে গিয়া আমরা ইংরাজের মত ব্যবহারও পাইতে পারি। হায়রে ইংরেজের স্বৰ্গ ! জেলখানার মধ্যে গালাগালি, মারামারি সবই সন্থ হয় ; কিন্তু ইহাদের মুখে ধৰ্ম্মের বক্তৃতা সন্থ করা দায়। আমাদের মধ্যে হেমচন্দ্ৰ চিত্ৰ-বিদ্যায় বেশ নিপুণ। তিনি দেওয়ালের গ্র্যাওলা, চুণ, ইটের গুড়া ঘসিয়া নানারূপ রং প্ৰস্তুত করিয়া সুন্দর সুন্দর ছবি দেওয়ালের গায়ে আকিয়া রাখিতেন । প্রহরীদের অত্যাচার হইতে বঁচিবার জন্য মাঝে মাঝে কাগজের উপর নখ দিয়া নানারূপ ছবিও তাহাদিগকে অ্যাকিয়া দিতেন । যাহারা চিত্রবিদ্যায় নিপুণ নন, তাহারা মাঝে মাঝে দেওয়ালের গায়ে কবিতা লিখিয়া মনের খেদ মিটাইতেন। একদিন এক झूठंद्बौद्म মধ্যে গিয়া দেখিলাম। একজন অজ্ঞাতনামা কবি দেওয়ালের গায়ে দুঃখ করিয়া লিখিয়াছেন ছিড়িতে ছিড়িতে পাট শরীর হইল কাঠ সোণার বরণ হৈল কালি ।