পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম পরিচ্ছেদ ዓ8

  • \ হইবে ? পুলিসের একজন পাঞ্জাবী মুসলমান হাওলদার বলিল—“বাৰু, যদি আমাদের হাতের ভাত খাও, তা দিতে পারি।” মুসলমানদের মধ্যে সহানুভূতিও আছে, আর ভাত খাওয়াইয়া হিঁদুর জাত মারিবার ইচ্ছা ও একটু একটু আছে। আমরা বলিলাম—“খুব ভাল কথা । আমাদের জাত এত পাকা যে, কোন লোকের হাতের ভাত খাইলেও তাহা ভাঙ্গিয়া পড়ে না।” সেখানে শিখ হাওলাদারও ছিল, তাহারা ভাবিল পেটের জালায় আমরা পরকালটা একেবারে নষ্ট করিতে বসিয়াছি। তাই তাহারাও আমাদের ভাত দিতে চাহিল। আমরা নির্বিবাদে উভয় দলের রান্না ভাত খাইয়া পেটের জ্বালাও থামাইলাম, ও আপনাদের উদারতা ও সপ্ৰমাণ করিলাম। শিখেরা ভাবিল-“বাঙ্গালী বাবুরা বুদ্ধিমান বটে, কিন্তু উহাদের ধৰ্ম্মাধৰ্ম্ম জ্ঞান একেবারে নাই।” যাই হােক, ধৰ্ম্ম বঁচিল কি মরিল তাহা ঠিক জানি না, কিন্তু দুটা ভাত খাইয়া সে যাত্ৰা প্ৰাণটা বঁচিয়া গেল। জাহাজে আমাদের নোয়াখালী জেলার অনেকগুলি বাঙ্গালী মুসলমান মাল্লাও ছিল, তাহদের হাতে রান্না ভাত ও কুমড়ার ছক্কা যেন অমৃতোপম মনে হইল।

যাই হোক, কোনও রূপে তিন দিন জাহাজে কাটাইয়া চতুর্থ দিনে পাের্টব্লেয়ারে হাজির হইলাম। দূর হইতে জায়গাটা বড়ই রমণীয় মনে হইল। সারি সারি নারিকেল গাছ, আর তাহার মাঝে মাঝে সাহেবদের স্নাংলো গুলি যেন একখানি ফ্রেমে বঁাধান ছবির মত। ভিতরের কথা তুৰ্থখন কে জানিত ? দুরে একখানা প্ৰকাণ্ড ত্রিতল বাড়ী দেখাইয়া দিয়া একজন সিপাহী বলিল-“ঐ কালাপানীর জেল, ঐখানে তোমাদের থাকিতে হইবে।” জাহাজ আসিয়া বন্দরে লাগিল। ডাক্তার আসিয়া সকলকে পরীক্ষা