পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vb নিৰ্বাসিন্ধুতর আত্মকথা ভাঙ্গিয়া পড়িবার উপক্রম হইল। তখন আবার ছোবঢ়া পিটিবার অধিকার। পাইলাম। কিন্তু ছোবড়া পিটিয়াই কি শান্তি আছে? প্রহরীরা বিশেষতঃ পাঠান ও পাঞ্জাবী মুসলমানেরা স্থির করিয়া লইয়াছিল যে আমাদের দাবাইতে পারিলেই কর্তৃপক্ষের প্রিয়পাত্র হওয়া যায়। কাজেই তাহারা সর্বদা আমাদের বিপদে ফেলিবার জন্য সচেষ্ট হইয়া থাকিত। ছোট খাটি খুটি নাট লইয়া যে কত জনকে বিপদে পড়িতে হইয়াছে তাহার আর ইয়ত্ব নাই। একদিন কুঠরীর মধ্যে পায়ে বেড়ী দিয়া শুষ্ক ছোবড়া পিটিতেছি। দারুণ গ্রীষ্মে ও কঠোর পরিশ্রমে মাথা হইতে পা পৰ্য্যন্ত ঘামের স্রোত ছুটয়াছে, ছোবড়া পিটিবার মুগুর মাঝে মাঝে লাফাইয়া লাফাইয়া আমারই মাথা ভাঙ্গিয়া দিবার চেষ্টা করিতেছে, এমন সময় কুঠরীর বাহিরে একজন পাঞ্জাবী মুসলমান প্রহরীকে দেখিয়া ছোবড়াগুলা ভিজাইবার জন্য একটু জল চাহিলাম। সে একেবারে দাতমুখ খিচাইয়া জবাব দিল-“না, না, হবে না, ঐ শুকনো ছোবড়াই পিটুতে হবে।” আমারও মেজাজটা বড় সুবিধার ছিল না । আমি জিজ্ঞাসা করিলাম-“জল না হয় নাই দেবে, কিন্তু অত দন্ত বিচ্ছেদ করছ, কেন ?” প্রহরী রুখিয়া দাড়াইল “কেয়া, গোস্তাফি করতা ?” আমি দেখিলাম। এখন আর হটিয়া যাওয়া চলে না । বলিলাম-“কেন, তুমি নবাবজাদা নাকি ?” বলিবামাত্র প্রহরী জানাল দিয়া হাত বাড়াইয়া আমার গলার হাঁসুলি ধরিয়া এমনি টান মারিল যে জানালার '*' লোহার গরাদের উপর আমার মাথা ঠুকিয়া গেল । রাগটা এত o೪ হইয়া উঠিল যে লোকটা যদি কুঠারীর ভিতরে থাকিত তাহা হইলে হয়ত তাহার মাথায় মুগুর বসাইয়া দিতাম। কিছু একটা না করিলেই নয়, কিন্তু কৱিবই বা কি ? শেষে তাহার হাতখানা চাপিয়া ধরিয়া এমনি কামড় বসাইয়া দিলাম যে তাহার হাত কাটিয়া ঝর ঝর করিয়া