পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপনীত ? আমার ফুলশয্যার পরে নবপরিণীতা বধূর করুণ আহবানলিপিখানি ডাকঘরের কর্মচারীরা এতকাল। লুকিয়ে রেখে কি রসিকতা করতে চেয়েছিল আমার সঙ্গে ! এই চিঠি আসছিল গত ত্ৰিশ বছর ধরে। কত ঘটনা ঘটে গোল এই ত্ৰিশ বছরে, আমার জীবনের কত উত্থান-পতনের ইতিহাসের মধ্য দিয়ে। কত শোক, দুঃখ, প্ৰেম-কাহিনীর মধ্য দিয়ে এই फ़िळेिथांना ठांमछिल । ত্ৰিশ বছর পরে এ চিঠি পেয়ে লাভ কি আমার ? চমৎকার শরৎ দুপুরটিতে শুধু বাইরের দিকে চেয়ে রইলাম চিঠিখান হাতে করে। দূর আকাশের কোণে যেন বেলপুকুর গ্রামটিতে আমার প্রথম শ্বশুর বাড়ির চিলে কোঠার ঘরে আমার প্ৰথম পরিণয়ের নববধূ আজও যেন আমার পত্রের উত্তরের প্রতীক্ষায় বসে আছে। চতুৰ্দশ বর্ষ দেশে অবস্থিত। সেই সুন্দরী বধুটের মুখ এতকাল একেবারেই মনে ছিল না-আজ হঠাৎ অতি আশ্চৰ্যরূপে স্পষ্ট হয়ে উঠলো। আমার স্ত্রী ঘরে ঢুকে বললে-পিয়ন এল দেখলাম, কার চিঠি এল গো ? আমন করে বসে আছ কেন ? চমকে উঠে চিঠিখান ঢাকা দিয়ে বলি-পিয়ন ? কই চিঠি কিছু আসে নি। ও সই দিতে নিয়ে এসেছিল। নিরুপমা মারা গিয়েছে আজ কত বছর ? আটাশ উনত্রিশ বছর খুব হবে। বিয়ের পর কতদিন বেঁচে ছিল বা ? বছরখানেক কি দেড় বছর হবে ।