ত্ৰৈয়োদশ পরিচ্ছেদ বিপদে পরদিন রাত নয়টার সময়ে দেবেন্দ্রবিজয় গোলদীঘীতে উপস্থিত হইলেন। ইতিপূৰ্ব্বে তিনি স্থানীয় থানা হইতে কয়েকজন অনুচর ঠিক করিয়া লইয়াছিলেন। তাহাদিগকে স্থানে স্থানে লুকাইয়া রাখিলেন ; এবং নিজে গোলদীর্ঘীর ভিতরে গিয়া হত্যাকারীর অপেক্ষা করিতে লাগিলেন । ক্রমে রাত্রি দশটা বাজিয়া গেল । দেবেন্দ্রবিজয় কোথায় কাহাকেও দেখিতে পাইলেন না-হত্যাকারী আসিল না। সম্মুখবন্তী পথ দিয়া পথিকগণ যে যাহার গন্তব্যস্থানে যাইতেছে ; কত লোক যাইতেছে, আসিতেছে-কাহাকেও তেঁাহার। প্ৰতি লক্ষ্য করিতে দেখিলেন না।-- সকলেই আপন মনে ফিরিতেছে। আকাশে চাদ উঠিয়াছে। অষ্টমীর অৰ্দ্ধচন্দ্রের কিরণ তেমন উজ্জ্বল নহে-কেমন যেন একটু অন্ধকার-মাখা হইয়া চারিদিকে ছড়াইয়া পড়িয়াছে। তুলারশিবৎ লঘু মেঘখণ্ডগুলি আকাশতলে দুষ্ট বালকের মত উদামভাবে ছুটািছুটি করিতেছে। চন্দ্ৰদেব মৃদুহাস্তে সেই অশিষ্ট মেঘশিশুদিগের সেই ক্রীড়া দেখিতেছিলেন। কখনও বা কাহাকেও আপনার বুকের উপরে টানিয়া লইতেছিলেন। এবং অদূৱস্থিত অশ্বখশাখাসীনঝঙ্কত কলকণ্ঠ পাপিয়ার মধুর স্বরতরঙ্গ আকাশ ভেদ করিয়া উঠিতেছিল; এবং দক্ষিণ দিক্ হইতে বৃক্ষশাখা কুঁপাইয়া, পথের ধূলিরাশি উড়াইয়া, হুহু শব্দে বাতাস বহিয়া আসিতেছিল।” স্থান ও সময় উভয়ই সুন্দর।
পাতা:নীলবসনা সুন্দরী - পাঁচকড়ি দে.pdf/১০৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।