পাতা:নীল-দর্পণ.pdf/২৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

(১৩)

 রাই। বড়বাবু, মলাম গো! জল খাব গো! মেরেফ্যাল্লে গো!

 নবীন। ধর্ম্মাবতার, উহাদিগের এখন স্নানও হয় নাই আহারও হয় নাই। উহাদের পরিবারেরা এখন বাসি মুখে জল দেয় নাই। যদি শ্যামচাঁদ আঘাতে রাইয়ত সমুদায় বিনাশ করিয়া ফেলেন তবে আপনার নীল বুন্‌বে কে? এই সাধুচরণ গত বৎসর কত ক্লেশে ৪ বিঘা নীল দিয়াছে, যদি উহাকে এরূপ নিদারুণ প্রহারে এবং অধিক দাদন চাপাইয়া ফেরার করেন তবে আপনারই লোকসান। উহাদের অদ্য ছাড়িয়া দেন, আমি কল্য প্রাতে সমভিব্যাহারে আনিয়া আপনি যেরূপ অনুমতি করিবেন সেইরূপ করিয়া যাইব।

 উড। তোমার নিজের চরকায় তেল দেও। পরের বিষয়ে কথা কহিবার কি আবশ্যক আছে?−সাধু ঘোষ, তোর্‌ মত কি তা বল? আমার খানার সময় হইয়াছে।

 সাধু। হুজুর, আমার মতের অপেক্ষা আছে কি? আপনি নিজে গিয়া ভাল ২ চার বিঘাতে মার্ক দিয়া আসিয়াছেন, আজ্‌ আমিন মহাশয় আর যে কয় খান ভাল জমী ছিল, তাহাতেও চিহ্ন দিয়া আসিয়াছেন। আমার অমতে জমী নিদ্দিষ্ট হইয়াছে নীলও সেইরূপ হইবে। আমি স্বীকার করিতেছি বিনা দাদনে নীল কর‍্যে দিব।

 উড। আমার দাদন সব মিছে, হারামজাদা, বজ্জাত, বেইমান (শ্যামচাঁদ প্রহার)

 নবীন। (সাধুচরণের পৃষ্ঠে হস্ত দিয়া আবরণ) হুজুর, গরিব ছা পোষা লোকটাকে একেবারে মেরে ফেলিলেন। আহা উহার বাড়ীতে খাইতে অনেক গুলিন। এ প্রহারে এক মাস শয্যাগত হইয়া থাকিতে হইবে। আহা! উহার