পাতা:নীল-দর্পণ নাটক - দীনবন্ধু মিত্র.pdf/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় অঙ্ক।
৮৩

ভাত খান, তিনি যে বড় বউমার হাতে নইলে খান্ না, আহা! বুক চাপ্‌ড়ে চাপ্‌ড়ে রক্ত বার করেছেন, কেঁদে কেঁদে চক্ষু ফুলিয়েছেন, যাবার সময় বলেন “গিন্নি! এই যাত্রা আমার গঙ্গাযাত্রা হলাে”— (ক্রন্দন) নবীন বলেন, “মা! তােমার ভগবতীকে ডাক, আমি অবশ্য জয়ী হয়ে ওঁরে নিয়ে বাড়ী আস্‌বাে”—বাবার আমার কাঞ্চনমুখ কালী হয়ে গিয়েছে, টাকার যােগাড় করিতেইবা কত কষ্ট, ঘুরে ঘুরে ঘুর্ণি হয়েছে, পাছে আমি বউদের গহনা দিই, তাই আমারে সাহস দেন, মা টাকার কমি কি, মােকদ্দমায় কতই খরচ হবে। গাঁতির মােকদ্দমায় আমার গহনা বন্দক পড়্‌লে বাবার কতই খেদ—বলেন কিছু টাকা হতে এলেই মার গহনা গুলিন আগে খালাস করে আন্‌বাে—বাবার আমার মুখে সাহস, চক্ষে জল— বাবা আমার কাঁদিতে কাঁদিতে যাত্রা কর্‌লেন—আমার নবীন এই রােদে ইন্দ্রাবাদ গেল,আমি ঘরে বসে রলাম, মহাপাপিনী! এই কি তাের মার প্রাণ!—

(সৈরিন্ধ্রীর প্রবেশ।)

 সৈরি। ঠাকুরুণ অনেক বেলা হয়েচে, স্নান কর। আমাদের অভাগা কপাল, তা নইলে এমন ঘটনা হবে কেন।