পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
নীল তারা ইত্যাদি

রসী পিসী চলে গেলে ঝিণ্টু শুয়ে পড়ল, কিন্তু কিছুতেই ঘুম এলনা। এক ঘণ্টা এপাশ ওপাশ করে সে বিছানা থেকে তড়াক করে উঠে পড়ল। তার মাথায় একটা খেয়াল এসেছে, একটা অ্যাডভেঞ্চার করতে হবে। ডিটেকটিভ, ডাকাত, বোম্বেটে, গুপ্ত ধন এই সবের গল্প সে অনেক পড়েছে। আজ রাতে যদি সে গুপ্ত ধন আবিষ্কার করতে পারে তো কেমন মজা হয়। সে তার মায়ের কাছে শুনেছিল, তার এক বৃদ্ধপ্রজেঠামহ অর্থাৎ প্রপিতামহের জেঠা পিশাচসিদ্ধ তান্ত্রিক ছিলেন। অনেককাল হল তিনি মারা গেছেন, কিন্তু তাঁর তোরঙ্গটি তেতলার ঘরে এখনও আছে! সেই তোরঙ্গ খুলে দেখলে কেমন হয়?

 ঝিণ্টুর একটা টর্চ আছে, দেড় টাকা দামের একটা পিস্তলও আছে। পিস্তলটা কোমরে ঝুলিয়ে টর্চ নিয়ে সে তেতলায় উঠল। সেখানে সিঁড়ির পাশে একটি মাত্র ঘর, তাতে শুধু অদরকারী বাজে জিনিস থাকে। সেই ঘরে ঢুকে ঝিণ্টু সুইচ টিপে আলো জ্বালল। তার বৃদ্ধপ্রজেঠামহ করালীচরণ মুখুজ্যের তোরঙ্গটা এক কোণে রয়েছে। বেতের তৈরি, তার উপর মোষের চামড়া দিয়ে মোড়া, অদ্ভূত গড়ন, যেন একটা প্রকাণ্ড কচ্ছপ। যে তালা লাগানো আছে তাও অদ্ভূত। দেয়ালে এক গোছা পুরনো চাবি ঝুলছে। ঝিণ্টু একে একে সব চাবি দিয়ে তালা খোলবার চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। সে হতাশ হয়ে ফিরে যাবার উপক্রম করছে, হঠাৎ নজরে পড়ল, তোরঙ্গের পিছনের কবজা দুটো মরচে পড়ে খয়ে গেছে। একটু টানাটানি করতেই খসে গেল। ঝিণ্টু