পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবামুখী চিমটে
১০৫

তখন তোরঙ্গের ডালা পিছন থেকে উলটে খুলে ফেলল।

 বিশ্রী ছাতা ধরা গন্ধ। উপরে কতকগুলো ময়লা গেরুয়া রঙের কাপড় রয়েছে, তার নীচে এক গোছা তালপাতায় লেখা পুঁথি আর তিনটে মোটা মোটা রুদ্রাক্ষের মালা। তার নীচে আবার কাপড়, তামার কোষা কুষি সাদা রঙের সরার মতন একটা পাত্র, একটা মরচে ধরা ছোট ছুরি, একটা সরু কলকে, অত্যন্ত ময়লা এক টুকরো নেকড়া, আর একটা চিমটে। ঝিণ্টু যদি চৗকস লোক হত তা হলে বুঝত—সাদা সরাটা হচ্ছে খর্পর অর্থাৎ মড়ার মাথার খুলি, আর ছুরি কলকে নেকড়া চিমটে হচ্ছে গাঁজা খাওয়ার সরঞ্জাম।

 বিরক্ত হয়ে ঝিণ্টু বলল, দুত্তোর, টাকা কড়ি হীরে মানিক কিচ্ছু নেই। তবে চিমটেটি মন্দ নয়, আন্দাজ এক ফুট লম্বা, মাথায় একটা আংটা, তাতে আবার আরও তিনটে আংটা গোছা করে লাগানো আছে। চিমটের গড়ন বেশ মজার, টিপলে মুখটা শেয়ালের মতন দেখায়, দু পাশে দুটো চোখ আর কানও আছে। বহুকালের জিনিস হলেও মরচে ধরে নি, বেশ চকচকে। তোরঙ্গ বন্ধ করে চিমটে নিয়ে ঝিণ্টু তার ঘরে ফিরে এল।


লো জ্বেলে বিছানায় বসে ঝিণ্টু সুকুমার রায়ের বইগুলো কিছুক্ষণ উলটে পালটে দেখল। পাশের ঘরের ঘড়িতে ঢং ঢং করে দশটা বাজল। এইবারে ঘুম পাচ্ছে, শোবার আগে সে আর একবার চিমটেটা ভাল করে দেখল। নাড়া পেয়ে মাথার আংটা-