পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
নীল তারা ইত্যাদি

গুলো ঝমঝম করে বেজে উঠল। তার পরেই এক আশ্চর্য কাণ্ড।

 দরজা ঠেলে এক অদ্ভূত মূর্তি ঘরে ঢুকল। বেঁটে গড়ন, ফিকে ব্লুব্ল্যাক কালির মতন গায়ের রং, মাথার চুলে ঝুঁটি বাঁধা, মুখখানা বাঁদরের মতন, নন্দলালের আঁকা নন্দীর ছবির সঙ্গে কতকটা মিল আছে। পরনে গেরুয়া রঙের নেংটি, পায়ে খড়ম। মূর্তি বলল, কি চাও হে খোকা?

 ঝিণ্টু প্রথমটা ভয়ে আঁতকে উঠল। কিন্তু সে সাহসী ছেলে, মূর্তিমান অ্যাডভেঞ্চার তার সামনে উপস্থিত হয়েছে, এখন ভয় পেলে চলবে কেন। ঝিণ্টু প্রশ্ন করল, তুমি কে?

 —ঢুণ্ঢুদাস চণ্ড। তোমার এক পূর্বপুরুষ পিশাচসিদ্ধ হয়েছিলেন তা শুনেছ? আমি সেই পিশাচ।

 তোমাকেই সেদ্ধ করেছিলেন বুঝি?

 —দূর বোকা, আমাকে সেদ্ধ করে কার সাধ্য। তিনি সাধনা করে নিজেই সিদ্ধ হয়েছিলেন, আমাকে বশ করেছিলেন। ওই শিবামুখী চিমটেটি আমিই তাঁকে দিয়েছিলাম। আমাদের মধ্যে এই বন্দোবস্ত হয়েছিল যে চিমটে বাজালেই আমি হাজির হব, আমাকে যা করতে বলা হবে তাই করব। কিন্তু করালী মুখুজ্যে ছিলেন নির্লোভ সাধু পুরুষ, কখনও ধন দৌলতের জন্যে আমাকে ফরমাশ করেন নি। শুধু হুকুম করতেন—লে আও তম্বাকু, লে আও গঞ্জা, লে আও ওমদা কারণবারি বিলায়তী শরাব, লে আও অচ্ছী অচ্ছী ভৈরবী। তিনি মারা যাবার পর থেকে আমি নিষ্কর্মা হয়ে আছি। শোন খোকা—আজ হল বৈশাখী অমাবস্যা। এক