পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবামুখী চিমটে
১০৯

 ঝিণ্টু তখন সমস্ত ব্যাপারটি খুলে বলল। সরসীর বিশ্বাস করল না, বলল, তুই বানিয়ে বলছিস ঝিণ্টে। করালী জেঠা পিশাচসদ্ধ ছিলেন এই রকম শুনেছি বটে, কিন্তু ও একটা বাজে গল্প।

 —বাজে গল্প! তবে এই দেখ—

 ঝিণ্টু চিমটে নেড়ে ঝন ঝন শব্দ করতেই ঢুণ্ডুদাস চণ্ডের আবির্ভাব হল। সরসী ভয়ে কাঠ হয়ে চোখ কপালে তুলে অবাক হয়ে দেখতে লাগল। পিশাচ বলল, কি চাই খোকা?

 ঝিণ্টু হুকুম করল, গরম মটর ভাজা, বেশ বড় বড়। বেশী করে দিও, পিসীমাও খাবে।

 পিশাচ অন্তর্হিত হল। একটু পরেই একটা কাগজের ঠোঙা শূন্য থেকে ধপ করে ঘরের মেঝেতে পড়ল। সদ্য ভাজা বড় বড় মটরে ভরতি, এখনও গরম রয়েছে। এক মুঠো নিয়ে ঝিণ্টু বলল, পিসীমা, একটু খেয়ে দেখ না।

 সরসী গালে হাত দিয়ে বলল, অবাক কাণ্ড! বাপের জন্মে এমন দেখি নি, শুনিও নি। কিন্তু তুই কি বোকা রে খোকা! কোথায় দশ বিশলাখ টাকা, মস্ত বাড়ি, দামী মোটর গাড়ি, এই সব চাইবি, তা নয়, চাইলি কিনা হাঁসজারু আর মটর ভাজা! ছি ছি ছি। আচ্ছা, তোর ওই চিমটেটা একবারটি আমাকে দে তো।

 পিসীর উপর ঝিণ্টুর কোনও দিনই বিশেষ টান নেই। ভেংচি কেটে বলল, ইস দিলুম আর কি! এই শেয়ালমুখো চিমটে আমি কারুকে দিচ্ছি না। তোমার কোন্ জিনিস সরকার বল না, আমি আনিয়ে দিচ্ছি।