পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বান্দ্বিক কবিতা
১১৯

 ভূপতি বলল, ছিরুর সব খবর আমি রাখি, ধূর্জটিরও নাড়ী নক্ষত্র জানি, সে দূর সম্পর্কে আমার শালা হয়। ছেলেবেলা থেকেই ধূর্জটি কবিতা লিখত, তার কবিখ্যাতি আছে, গোটাকতক বইও আছে। অনেক কবি যেমন করে থাকে সেই রকম ধূ্জটিও একটি মানসী প্রিয়া খাড়া করে তার উদ্দেশে কবিতা লিখত।

 উপেন দত্ত বলল, এর মানে আমি মোটেই বুঝতে পারি না। আমাদের ছোট বড় বিবাহিত অবিবাহিত শত কবি আছেন তাঁদের অনেকে একটি মনগড়া মেয়ের উদ্দেশে কবিতা লেখেন। এতে তাঁদের কি লাভ হয়?

 যতীশ বলল, শাস্ত্রে আছে, সাধকদের হিতের জন্য ব্রহ্মের রূপকল্পনা। কবিরা তেমনি প্রেমাকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করবার জন একটি পরমা প্রেয়সীর কল্পনা করেন। এ একরকম তান্ত্রিক নায়িকাসাধনা।

 পিনাকী বললেন, বাজে কথা। একে বলে মনে মনে ব্যক্তিচার। যাদের স্ত্রী নেই কিংবা স্ত্রী পছন্দ হয় না সেই সব কবিই মনগড়া নারীর সঙ্গে প্রেম করে।

 উপেন বলল, সর্বজ্ঞ মশাই যা বললেন তা হয়তো ঠিক, যতীশদার কথাও ঠিক। কিন্তু কবিদের এইরকম প্রেমলীলার জন্যে তাদের স্ত্রীরা চটে না কেন? মেয়ে কবিও তো ঢের আছে, তারা তো মনগড়া প্রেমিকের উদ্দেশে কবিতা লেখে না।

 যতীশ বলল, কেউ কেউ লেখে বইকি। তবে খুব কম, কারণ কায়মনোবাকো সতীধর্ম পালন করার সংস্কার এদেশের বেশীর