ভাগ মেয়ের এখনও আছে। পুরুষদের সে বালাই নেই। কবিদের স্ত্রীরা মনে করে, ছাগলে কি না খায়, কবিরা কি না লেখে, তাতে দোষ ধরলে চলে না।
ভূপতি বলল, কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে গণ্ডগোল বাধে, স্বামী-স্ত্রীর জীবনযাত্রার ওলটপালট ঘটে, যেমন ধূর্জটিদের হয়েছে। ওদের সব খবরই আমি রাখি, বলছি শোন।—
ধূর্জটি যখন ছোট তখনই তার বাপ মা মারা যান, এক মামা তাকে নিজের কাছে রেখে পালন করেন। শিক্ষা শেষ করে ধূর্জটি তার মামার কারবারে যোগ দিল, দেদার কবিতাও লিখতে লাগল। তার পর তার বিয়ে হল। দ্বিজেন্দ্রলাল যেমন লিখেহেন ধূর্জটির ঠিক সেই রকম মনে হল—ভাবলাম বাহা বাহা রে, কি রকম যে হয়ে গেলাম বলব তাহা কাহারে। এতদিন সে কাল্পনিক প্রিয়ার উদ্দেশে কবিতা লিখত, এখন জীবন্ত প্রিয়ার ওপর লিখতে লাগল। বউএর শংকরী নামটা সেকেলে বলে ধূর্জটি বদলাতে চেয়েছিল, কিন্তু বউ রাজী হল না, বলল, ও আমার জেঠামশায়ের দেওয়া নাম, বদলানো চলবে না; তোমার নামটাই বা কি এমন মধুর? অগত্যা সেকেলে শংকরীকেই সম্বোধন করে ধূর্জটি লিখতে লাগল—নন্দনের ঊর্বশী, পাতালপুরীর রাজকন্যা, সাগর থেকে ওঠা ভিনস, আমার হৃদর যা চায় তুমি ঠিক তাই গো, এই সব।