পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বান্দ্বিক কবিতা
১২৩

 রমেশ তার বউদিদির সঙ্গে পরামর্শ করে তৈরী হয়েই গিয়েছিল। বলল, আচ্ছা তরণী, তোমার পত্রিকার লাভ কত হয়?

 —লাভ কোথায়, এখনও ঘর থেকে গচ্চা দিতে হয়।

 —তবে বলি শোন। প্রতি মাসে আমি পাঁচ-ছটা কবিতা আনব, প্রত্যেকটি ছাপবার জন্যে পাঁচ টাকা হিসেবে দেব। তাতে পঁচিশ-তিরিশ টাকা পাবে। রাজী আছ?

 তরণী সেন বলল, তা মন্দ কি, কাগজের খরচটা তো উঠবে। টাকা পেলে প্রতি সংখ্যায় দশটা কবিতা ছাপতে রাজী আছি। কিন্তু দেখো ভাই, নিতান্ত রাবিশ না হয়।

 —আরে না না। শংকরী দেবীর নামে ছাপা হবে বটে কিন্তু বেশীর ভাগ আমার বউদিই লিখবেন। তাঁর হাত খুব পাকা।

 নিস্যাদিনী পত্রিকায় শংকরী দেবীর নামে কবিতা ছাপা হতে লাগল। তা দেখে ধূর্জটির মনে কিঞ্চিৎ কৌতুক আর করুণার উদয় হল। সে তার স্ত্রীকে বলল, বেশ তো, শখ যখন হয়েছে লিখতে থাক। এখন বড্ড কাঁচা, লিখতে লিখতে হাত পাকতে পারে। চাও তো আমি সংশোধন করে দিতে পারি। শংকরী বলল, না না, তোমার কিছু করতে হবে না, যা পারি আমিই লিখব। বদনাম হয় তো আমারই হবে, তোমার ক্ষতি হবে না।

 শংকরী দেবীর কবিতা ক্রমশ কাঁচা থেকে পাকা, ঠাণ্ডা থেকে গরম, এবং গরম থেকে গরমতর হতে লাগল। পাঠকরা বলল, কি চমৎকার! একজন আধুনিক সমালোচক লিখলেন—এক অনাস্বাদিতপূর্ব রসধন কাব্যমধুরিমা, নারীর অন্তর্নিহিত