পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বান্দ্বিক কবিতা
১২৫

 আর একটা বলি শোন—

ও বিদেশী পাখতুনিস্তানবাসী,
তাগড়া জাক্কাখেল, আমি তোমায় ভালবাসি।
নর্ডিক নীল তোমার সুর্মা পরা চোখ,
সেমেটিক নাকের নীচে মোটা ছাঁটা গোঁফ।
তোমার লোমজঙ্গল বুকে টেনে নাও আমাকে,
ক্র্যাংক-শাফ্‌টের মতন দুই হাতে জাপটে ধর,
মড়মড়িয়ে ভেঙে দাও আমার পাঁজরা,
পিষে ফেল, পিষে ফেল।

 এই সব কবিতা নিস্যন্দিনী পত্রিকায় দেদার ছাপা হতে লাগল। ‘কাঙ্ক্ষার ঝংকার’ নাম দিয়ে শংকরীর একটা কবিতাসংগ্রহ প্রকাশিত হল, তিন মাসের মধ্যেই তিনটে সংস্করণ ফুরিয়ে গেল। ধূর্জটি নিজের রচনা নিয়েই মেতে থাকত, তার বউ কি লিখছে, তা পড়ে লোকে কি বলছে, এ সব খবর রাখত না। একদিন তার এক সাহিত্যিক বন্ধু একখানা কাঙ্ক্ষার ঝংকার দেখিয়ে বলল, ওহে ধূর্জটি, এই শংকরী দেবী তোমারই গৃহিণী তো? ওঃ, ভদ্রমহিলা কি সব অদ্ভুত কবিতা লিখছেন, রেগুলার হট স্টফ। পড়ে তোমার মনে একটু ইয়ে হয় না? আমাদের সাইকোলজিস্ট প্রফেসার ভড় বলছিলেন, এ হচ্ছে উদ্দাম লিবিডো।

 ধূর্জটির ভাবনা হল। স্ত্রীর কাছ থেকে তার কবিতার বই চেয়ে নিয়ে খুব মন দিয়ে পড়ল। তার মেজাজ বিগড়ে গেল। শংকরীকে বলল, এ সব কি ছাই ভস্ম লেখা হচ্ছে? লোকে যে