পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বান্দ্বিক কবিতা
১২৭

মশাই?

 ধূর্জটি বলল, তা বলে চীনেম্যান আর কাবলীওলার উদ্দেশে প্রেমের কবিতা লিখবে?

 —আচ্ছা আচ্ছা, এখন থেকে না হয় বাঙালী তরুণদের উদ্দেশেই লিখবে। কিন্তু তার চাইতে ভাল—আপনি আজ থেকে নিজের গিন্নীর নামে কবিতা লিখুন, যেমন প্রথম প্রথম লিখতেন। আর সেও আপনার নামে লিখুক। এক বাড়িতে যখন বাস করছেন, দুজনেই যখন কবি, তখন রেসিপ্রোসিটি না হলে চলবে কেন?

 ধূর্জটি কিন্তু বুঝল না, তার মন অস্থির হয়ে উঠল। ভাল করে খায় না, ঘুময় না, আপিসের কাজেও মন দেয় না। এই অবস্থায় একদিন ছিরু ঘোষের সঙ্গে তার দেখা হল। ছিরু তখন মঠাধীশ মণ্ডলেশ্বর হাজার আট-শ্রী হিজ হোলিনেস শ্রীদাম মহারাজ। দশ আঙুলের দশটা হীরের আংটি, বাসন্তী রঙের সিল্ক ভিন্ন পরে না। সে মিষ্টি মিষ্টি করে অনেক তত্ত্বকথা শোনাল, ধূর্জটি মুগ্ধ হল। ছিরু বলল, কোনও চিন্তা নেই, তোমার সমস্ত ক্ষোভ আমি দূর করে দেব, তোমরা স্বামী-স্ত্রীতে যাতে পরমা শান্তি পাও তার ব্যবস্থা করব।

 তার পর ছিরু ধূর্জটিকে যে লেকচারটি দিল তার সার ধর্ম এই।—তোমাদের এই দাম্পত্যকলহ মার্ক্‌স-কথিত দ্বান্দ্বিক নিয়মেই হয়েছে। তুমি কাল্পনিক প্রিয়ার উদ্দেশে কবিতা লেখ, তাতে তোমার স্ত্রী চটে উঠল—এ হল থিসিস। তার প্রতিক্রিয়া,