বক্তৃতা শেষ হলে আমরা সকলে খুব হাততালি দিলাম। ভোলা আমার পাশেই বসেছিল, হঠাৎ সে খ্যাঁক খ্যাঁক করে বিশ্রী রকম হেসে উঠল। আমি বললাম, ওকি রে?
ভোলা বলল, একটু হেসে নিলাম। এই নতুন হাসিটা প্র্যাকটিস করছি, ধনু মামার কাছে শিখেছি।
—ধনু মামা আবার কে?
—আমার দিদিমার পিসেমশাই ধনঞ্জয় দত্ত, খুব বুড়ো মানুষ। মা তাঁকে বলে ধনু দাদা, তাই তিনি আমার মামা হন। দশ দিন হল এসেছেন, আমাদের বাড়িতেই বরাবর থাকবেন। চমৎকার হাসেন ধনু মামা, কিন্তু বেশী নয়, খুব যখন ফুর্তি হয় তখন।
—তোর তা শেখবার কি দরকার?
—নতুন বিদ্যে শিখতে হয় রে। তুইও তো মুখে দুটো আঙুল পুরে সিটি বাজানো শিখছিস। আমার হাসিটা এখনও ঠিক হচ্ছে না, সুর দুরস্ত করতে আরও সাত দিন লাগবে। চল না আমাদের বাড়ি, ধনু মামার হাসি শুনে আসবি। একটা চার পয়সা দামের ছোট খাতা কিনে নে। ধনু মামা যদি জিজ্ঞেস করে—কি করতে এসেছ হে ছোকরা? তুই অমনি খাতা খানা এগিয়ে দিয়ে বলবি—আজ্ঞে, একটি বাণী নিতে এসেছি।
মোড়ের দোকান থেকে খাতা কিনে ভোলার সঙ্গে চললাম। তার বাপ ঠিকাদারি করেন, বেশীর ভাগ বাইরেই ঘুরে বেড়ান। বাড়িতে তার মা আছেন, দুটো ছোট ভাইও আছে। ভোলার কাছে শুনলাম, ধনঞ্জয় দত্তর তিন কুলে কেউ নেই, কিন্তু বুড়োর নাকি