বিস্তর টাকা আছে। তিনি ওদের বাড়িতে স্থায়ী হয়ে বাস করবেন এতে ভোলার বাবা আর মা খুব খুশী হয়েছেন।
ধনু মামা রোগা বেঁটে মানুষে, কালো রং, তোবড়া গাল, আসল বা নকল কোনও দাঁত নেই। সাদা চুল, খোঁচা খোঁচা সাদা দাড়ি গোঁফ, বোধ হয় সাত দিন নাপিতের হাত পড়ে নি। তাঁর শোবার ঘরে তক্তপোশে উবু হয়ে বসে হুঁকো টানছেন, ধোঁয়ায় ঘর ভরে গেছে।
আমি প্রণাম করে পায়ের ধুলো নিলাম। ভোলা পরিচয় দিল—এ আমার বন্ধু রামেশ্বর, এক ক্লাসে পড়ে।
ধনু মামা কপাল কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে ব্যাঙের মতন মোটা গলায় বললেন, কি মতলবে এসেছিস রে?
খাতাটা এগিয়ে দিয়ে বললাম, আজ্ঞে, বাণী নিতে।
—বাণী? সে আবার কি?
ভোলা আমার হয়ে উত্তর দিল, বাণী জানেন না? সদুপদেশ আর কি, যাতে এর আখেরে ভাল হয় সে রকম কিছু কথা আপনার কাছে চাচ্ছে।
ধনু মামার ঠোঁটে একটু হাসি ফুটে উঠল। বললেন, মন দিয়া লেখাপড়া শিখিবে, সদা সত্য কহিবে, চুরি করিবে না—এই সব তো?
আমি বললাম, আজ্ঞে হাঁ, ওই রকম যা হক কিছু।
ধনু মামা বললেন, রাত্তিরে ভাল দেখতে পাই না, হাতও কাঁপে।