পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩৮
নীল তারা ইত্যাদি

করতাম। চিঠি বইবার জন্যে তিনি আমাকে একটা ক্যাম্বিসের ব্যাগ দিয়েছিলেন।

 হাবা গোবা মনে করে সবাই আমাকে ঠাট্টা করত, আমি ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকতাম আর বোকার মতন হাসতাম। কিন্তু কান সর্বদা খাড়া থাকত, গুজগুজ ফিসফিস করে কে কি বলছে সব মন দিয়ে শুনতাম। ক্রমশ আমার কানে এল—বুদ্ধিচাঁদ খুব তুখড় কাজের লোক, সকলের সঙ্গে তাঁর ব্যবহারও ভাল। কিন্তু হাতটান আছে, ফার্মের টাকা সরিয়ে থাকেন, জুয়ো খেলেন, নেশা করেন, অন্য দোষও আছে।

 রামনবমীর দিন ওঁদের নতুন খাতা হত। তার আগের দিন বড় বড় খদ্দেররা তাদের দেনা চুকিয়ে দিত। আমি বাহাল হবার পাঁচ-ছ মাস পরেই ওঁদের বছর কাবার হল, যাকে হলে সাল তামামি। রাত্রি পর্যন্ত কাজ চলবে তাই আমাদের জলখাবারের জন্যে প্রচুর কচৌড়ি আর লাড্ডু আনা হল। অনেক রাত পর্যন্ত টাকা আসতে লাগল, বৃদ্ধিচাঁদ তাঁর কামরায় বসে নিজেই নোট আর টাকা গনতি করতে লাগলেন, আমি নোটের বাণ্ডিল বাঁধতে লাগলাম। চেক খুব কম, খুচরো টাকাও কম, বেশীর ভাগই পাঁচ শ, এক শ, আর দশ টাকার নোট।

 রাত এগারোটার সময় কাজ শেষ হল, আমলারা ছুটি পেয়ে চলে গেল। বৃদ্ধিচাঁদ আমাকে বললেন, হিসাব মিলাতে আমার কিছু দেরি হবে, হাব্বু তুই দরজায় বসে থাক, আমার কামরায় কাকেও ঢাকতে দিবি না। আর শোন্—এই প্যাকিটটা তোর