পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধনু মামার হাসি
১৩৯

কাছে রাখ্, কাল মথুরানাথ মিসিরের কিতাবের দোকানে ফেরত দিয়ে বলবি, এসব জাসুসী কহানী (অর্থাৎ ডিটেকটিভ গল্প) বৃদ্ধিচাঁদজী পড়তে চান না, ভক্তমাল গ্রন্থ যদি থাকে তো তাঁকে যেন পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

 বইএর প্যাকেটটা আমার চিঠি বিলির ব্যাগে পুরে আমি কামরার বাইরে পাহারায় বসলাম, বৃদ্ধিচাঁদ দরজা বন্ধ করে হিসাব মেলাতে লাগলেন। দরজার কবজার কাছে একটু ফাঁক ছিল, তাই দিয়ে আমি উঁকি মেরে দেখতে লাগলাম। ঘরে কেরোসিনের একটা বড় ল্যাম্প জ্বলছে, বৃদ্ধিচাঁদ টেবিলের ওপর নোটের বাণ্ডিলগুলো নাড়াচাড়া করছেন, মাঝে মাঝে একটা বোতল থেকে মদ ঢেলে খাচ্ছেন। তাঁর ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠল, একটু পরেই খ্যাঁক খ্যাঁক শব্দ বার হল, যেন খ্যাঁকশেয়াল ডাকছে। তিনি চেক আর খুচরো টাকা লোহার আলমারিতে বন্ধ করলেন, আর সমস্ত নোটের গোছা এক সঙ্গে খবরের কাগজে জড়িয়ে সরু দড়ি দিয়ে বাঁধলেন। তার পর পাশের ঘর থেকে একটা ছোট স্টীল ট্রাংক এনে মেঝেতে রেখে খুললেন। তাতে কাপড় চোপড় রয়েছে।

 ঠিক এই সময় আপিস ঘরের সামনের রাস্তায় একটা ঘোড়ার গাড়ি এসে দাঁড়াল। সইস চেঁচিয়ে আমাকে বলল, এ হাব্বু, মাইজী এসেছেন, বৃদ্ধিচাঁদকে জলদি আসতে বল্।

 মাইজী হচ্ছেন কারবারের মালিক প্রয়াগদাসের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী, বৃদ্ধিচাঁদ যাকে ভাবীজী অর্থাৎ বউদিদি বলেন। আমি দরজা একটু ফাঁক ক’রে বললাম, হুজুর মাইজী এসেছেন, আপনাকে