পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
নীল তারা ইত্যাদি

ডাকছেন। বৃদ্ধিচাঁদ বিরক্ত হয়ে বললেন, আঃ, আসবার সময় পেলেন না, এত রাত্রে টাকা চাইতে এসেছেন! কাজের সময় যত সব বখেড়া। আমাকে তো এখনই রওনা হতে হবে, ট্রেনের টাইম হয়ে এল। হাব্বু, তুই ঘরের দরজা ভেজিয়ে দিয়ে ভিতরে বসে থাক্, কেউ যেন না ঢোকে। আমি ভাবীজীকে বিদায় করে এখনই আসছি।

 বৃদ্ধিচাঁদ তাঁর তোরঙ্গের কাপড়ের মধ্যে নোটের বাণ্ডিলটা গুঁজে দিলেন। ডালা বন্ধ করতে পারলেন না, একটু উঁচু হয়ে রইল। আমাকে বললেন, হাব্বু, তুই তোরঙ্গের উপরে বসে থাক, আমি তুরন্ত আসছি।

 বৃদ্ধিচাঁদ বেরিয়ে যেতেই সিদ্ধিদাতা গণেশ আমাকে বুদ্ধি দিলেন। তাড়াতাড়ি তোরঙ্গ থেকে নোটের বাণ্ডিলটা বার করে আমায় ব্যাগে পুরলাম, আর ব্যাগে যে বইএর প্যাকেট ছিল তা তোরঙ্গে গুঁজে দিলাম। নোটের বাণ্ডিল আর বইএর প্যাকেট আকারে প্রায় সমান।

 একটু পরে বৃদ্ধিচাঁদ ফিরে এলেন। দেখলেন, আমি তোরঙ্গের উপর গট হয়ে বসে আছি, আমার চাপে ডালাটি ঠিক হয়ে গেছে। ডালা একটা তুলে ভিতরে হাত দিয়ে দেখলেন বাণ্ডিলটা ঠিক আছে কিনা। তার পর চাবি বন্ধ করে বৃদ্ধিচাঁদ ব্যস্ত হয়ে আমাকে বললেন, আমি এখনই বহরমপুর রওনা হচ্ছি, ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হবে। আর সময় নেই, তুই আমার তোরঙ্গটা স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দে।