পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধনু মামার হাসি
১৪১

 বৃদ্ধিচাঁদ আপিস ঘরে তালা লাগিয়ে তার চাবিটা আমাকে দিয়ে বললেন, কাল সকালে বৈজনাথবাবুকে দিয়ে আসবি। বৈজনাথ ছিলেন ফার্মের বড়বাবু দূর সম্পর্কে মালিকের শালা।

 আমার ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে আর বৃদ্ধিচাঁদের তোরঙ্গ মাথার নিয়ে আমি আগে আগে চললাম, বৃদ্ধিচাঁদ আমার পিছনে চললেন। স্টেশন খুব কাছে। সেখানে পৌঁছে টিকিট কেনা মাত্র ট্রেন এসে পড়ল। তোরঙ্গটা আমার হাত থেকে নিয়ে বৃদ্ধিচাঁদ উঠে পড়লেন, আর আমাকে একটা দশ টাকার নোট দিয়ে বললেন, তোর বকশিশ। তখনই ট্রেন ছাড়ল।

 আমি তাড়াতাড়ি কাকার বাসায় ফিরে এলাম এবং নোটের বাণ্ডিল সুদ্ধ ব্যাগটা বালিশের মতন মাথায় দিয়ে শুয়ে পড়লাম। ঘুম মোটেই হল না। বৃদ্ধিচাঁদের হাসিটা ছিল ছোঁয়াচে, সমস্ত রাত জেগে খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসতে লাগলাম। আমার একটা তোবড়া টিনের তোরঙ্গ ছিল, তাতেই সর্বস্ব থাকত। সকালে সেই তোরঙ্গে নোটের বাণ্ডিল রেখে বৈজনাথবাবুর বাড়ি গিয়ে তাঁকে আপিসের চাবি দিলাম। বৃদ্ধিচাঁদ বহরমপুর গেছেন শুনে তিনি বললেন, বহুত তাজ্জব কি বাত! তখনই তিনি প্রয়াগদাসের কাছে গেলেন।

 বেলা দশটা নাগাদ হই হই কাণ্ড। সমস্ত শহরে রটে গেল—বৃদ্ধিচাঁদ বিস্তর টাকা নিয়ে পালিয়েছেন, ফার্মের আপিস পুলিসে ঘেরাও করেছে, প্রয়াগদাসের দু জন উকিলও সেখানে গেছেন। আমি কাকাকে বললাম, আমার মনিব তো ফেরার,