পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
নীল তারা ইত্যাদি

সাত দিন পরে একজন লোক আমাদের ইস্কুলে খবর দিল, ধনু মামা হঠাৎ মারা গেছেন, ভোলাকে তার মা এখনই বাড়ি যেতে বলেছেন। ছুটি নিয়ে আমিও ভোলার সঙ্গে গেলাম।

 ধনু মামাকে উঠনে শোয়ানো হয়েছে। তাঁর মুখ একটু ফাঁক হয়ে আছে, যেন হাসতে হাসতেই মারা গেছেন। পাড়ার জন কতক মেয়ে পুরুষ ভোলার মাকে সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করছেন। তিনি চিৎকার করে হাত নেড়ে বলছেন, পাজী হতভাগা নিমকহারাম বুড়ো, এত দিন সেবা যত্ন করলাম আর দিয়ে গেলেন মোটে দু শ। সর্বনেশে কুচুণ্ডে জোচ্চোর ছ্যাঁচড়! আমাকে না হয় ফাঁকি দিলি, দান ধ্যানের জন্যেও তো রেখে যেতে পারতিস।

 ভোলা খোঁজ নিয়ে আমাকে যা জানাল তা এই।—ধনু মামার তোরঙ্গ থেকে দুটো বাণ্ডিল আর একটা লেখা কাগজ বেরিয়েছে। ছোট বাণ্ডিলটার উপর লেখা আছে—ভোলার জননী কল্যাণীয়া শ্রীমতী নন্দরানীকে আমার উপার্জিত এই দুই শত টাকা নগদ দান করিলাম; ইহাই যথেষ্ট, স্ত্রীলোকের অধিক লোভ ভাল নহে। বড় বাণ্ডিলের উপর লেখা আছে—খুলিবে না, ইহা আমার দৈবলব্ধ নিজস্ব ধন, যেমন আছে তেমনি আমার চিতায় দিবে। কাগজটায় লেখা আছে—আমার যে রুপো বাঁধানো ঢাকাই কলি হুঁকা আছে তাহা শ্রীমান ভোলানাথ পাইবে; এবং আমার আঙুলে যে রুপোর গণেশ-মার্কা আংটি আছে তাহা ভোলানাথের বন্ধু শ্রীমান রাজেশ্বর পাইবে।

 ভোলার মা কিন্তু ধনু মামার অন্তিম ইচ্ছা পালন করেন নি,