পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মাঙ্গলিক
১৪৭

সভাপতি মাননীয় কিনা, মহাশয় কিনা, তার প্রমাণ নেই, সেজন্য ও সব না বলে শুধু সভাপতি বলেছি। যারা আমার বাণী শুনতে এখানে এসেছে তাদের ভদ্র মহোদয় ও ভদ্র মহিলাগণ বলতেও আমি রাজী নই। তোমাদের মধ্যে কত জন ভদ্র আর কত জন অভদ্র আছে তা আমি জানব কি করে? কোনও প্রাণিজাতির উল্লেখ করতে হলে কেউ ভেড়া-ভেড়ী বা ছাগল-ছাগলী বলে না, শুধু ভেড়া বা ছাগল বললে তৎ তৎ প্রাণীর স্ত্রীপুরুষ দুইই বোঝায়। অতএব ভদ্র মহোদয় ও ভদ্র মহিলা না বলে আমি তোমাদের যে শুধু মানুষ বলে সম্বোধন করেছি তাই যথেষ্ট। যাক, এখন আমার বক্তব্য শোন। তোমাদের অসংখ্য জিজ্ঞাস্য আছে, নানা বিষয় জানবার জন্যে ছটফট করছ, তা আমি বুঝি। কিন্তু আমার সময় অতি অল্প আর তোমাদের বোধশক্তিও অতি ক্ষীণ, সেজন্যে অতি সংক্ষেপে ভাষণ দিচ্ছি।

 তোমাদের কৌতূহল কিয়ৎ পরিমাণে নিবৃত্তির জন্যে জানাচ্ছি—আমরা বিশ জন মঙ্গল গ্রহ থেকে এই ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবতরণ করেছি। পরে অন্যান্য দেশেও আমরা যাব। আমাদের উদ্দেশ্য—মানবজাতির কিঞ্চিৎ মঙ্গল সাধন। কি করে এসেছি জানতে চাও? উড়ন চাকতিতে চড়ে আসি নি, থালা বা রেকাবিতে চড়েও আসিনি। অতি সোজা উপায়ে ঝুপ করে নেমেছি, উল্কাপাত যেমন করে হয়। পতনের দারুণ বেগ কি করে সয়েছি, তোমাদের স্থূল বায়ুমণ্ডলের ঘর্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যাই নি কেন—এ সব জানতে চেয়ো না, জটিল বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব তোমরা