পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্মৃতিকথা
১৬৫

 রাজভগিনী শূর্পণখা খুশী হয়ে বললেন, লক্ষ্মী মেয়ে তুই। আশীর্বাদ করি রূপে গুণে নিখুঁত একটি বরের সঙ্গে তোর বিয়ে হয়ে বাক, তা হলেই আমরা নিশ্চিন্ত হই।

 —বর এখন থাকুক, তুমি স্মৃতিকথা বল।

 —সে সব দুঃখের কাহিনী শুনে কি হবে? ওঃ, অযোধ্যার সেই বজ্জাতদের কথা মনে পড়লেই আমার মাথা বিগড়ে যায়, দাঁত কিড়মিড় করে, রক্ত টগবগিয়ে ফোটে, শোক উথলে ওঠে।

 —তা হ’ক, তুমি বল।

 বিকাল বেলা দোতলার বারান্দায় বাঘের চামড়ার উপর বসে তাকিয়ায় ঠেস দিয়ে শূর্পনখা সমুদ্রবায়ু সেবন করছিলেন, পুষ্কলা পানের বাটা এনে তাঁর পাশে বসলেন।

 রাবণবধের পর দু বৎসর কেটে গেছে। বিভীষণ রাজা হয়েই লঙ্কার প্রাসাদ মন্দির উপবন প্রভৃতি মেরামত করিয়েছেন। হনুমান যে ভীষণ ক্ষতি করেছিলেন তার চিহ্ন এখন বেশী দেখা যায় না। বিভীষণ তাঁর ছোটবোনকে একটি আলাদা মহল দিয়েছেন, শূর্পনখা তাঁর চেড়ীদের সঙ্গে সেখানে বাস করেন। বিভীষণ আর সরমার উপর মনে মনে প্রচণ্ড আক্রোশ থাকলেও তাঁদের কিশোরী কন্যা পুষ্কলাকে তিনি স্নেহ করেন।

 রাক্ষস ছলৎকারু খুব ভাল কারিগর, যুদ্ধের সময় ইন্দ্রজিতের আজ্ঞায় সে মায়াসীতা গড়েছিল। ইন্দ্রজিৎ তাঁর রথের উপরে সেই মূর্তি কেটে ফেলে হনুমানকে উদ্‌ভ্রান্ত করেছিলেন। শূর্পণখা এখন যে সুঁদরী কাঠের নাসাকর্ণ ধারণ করেন তাও ওই