পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৬
নীল তারা ইত্যাদি

ছলৎকারুর রচনা। দেখতে প্রায় স্বাভাবিক, সহজে ধরা যায় না, কিন্তু শূর্পণখার কথার নাকী সুর দূর হয় নি।

 পঁচিশ খিলি পান একসঙ্গে মুখগহ্বরে নিক্ষেপ করে শূর্পণখা তাঁর স্মৃতিকথা বলতে লাগলেন।—জানিস কলা, লঙ্কার এই রাজবংশ যেমন মহান তেমনি বিপুল। আমাদের মাতামহ ছিলেন প্রবলপ্রতাপ সুমালী, বিষ্ণুর সঙ্গে যুদ্ধে হেরে গিয়ে তিনি লঙ্কা ত্যাগ করে রসাতলে আশ্রয় নেন। তখন যক্ষদের রাজা কুবের লঙ্কা অধিকার করল। সুমালীর কন্যা কৈকসী (যাঁর অন্য নাম নিকষা) মহামুনি বিশ্রবার ঔরসে তিন পুত্র আর এক কন্যা লাভ করেন। বড় ছেলে রাবণ, মেজো কুম্ভকর্ণ, ছোট তোর বাপ বিভীষণ, আর তাঁদের ছোট আমি। বিশ্ববার প্রথম পক্ষের এক ছেলে ছিল, সেই হল কুবের। রাবণ ক্রমশ প্রবল হয়ে উঠলেন, তখন বিশ্রবা মুনির উপদেশে কুবের লঙ্কা ছেড়ে হিমালয়ের ওপারে পালিয়ে গেল, লঙ্কা আবার আমাদের দখলে এল।

 পুষ্কলা বললেন, ওসব ইতিহাস তো আমার জানা আছে, তুমি নিজের কথা বল। তোমার একবার বিয়ে হয়েছিল না?

 আরও পঁচিশ খিলি পান মুখে পুরে শূর্পণখা বললেন, বিয়ে তো একবার হয়েছিল। দানবরাজ বিদ্যুজ্জ্বিহ্ব আমার স্বামী ছিলেন, অতি সুপুরুষ আর আমার খুব বাধ্য। কিন্তু বড়দার তো কাণ্ডজ্ঞান ছিল না, কালকের দৈত্যদের সঙ্গে যুদ্ধ করবার সময় নিজের ভগিনীপতিকেই মেরে ফেললেন। আমি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে লঙ্কেশ্বরকে যাচ্ছেতাই গালাগালি দিলুম।