পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্মৃতিকথা
১৬৭

তিনি বললেন, চেঁচাস নি বোন, একটা স্বামী মরেছে তো হয়েছে কি? যুদ্ধের সময় আমি প্রমত্ত হয়ে শরক্ষেপণ করি, তোর স্বামীকে চিনতে না পেরে বধ করে ফেলেছি। যা হবার তা হয়ে গেছে, এখন শোক সংবরণ কর, তোর জন্যে আমি ভাল ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আমাদের মাসতুতো ভাই খর চোদ্দ হাজার রাক্ষস সৈন্য নিয়ে দণ্ডকারণ্যে যাচ্ছে, তুইও তার সঙ্গে সেখানে যা। খর তোর সমস্ত আজ্ঞা পালন করবে। দণ্ডকারণ্য খাসা জায়গা, বিস্তর ঋষি সেখানে তপস্যা করেন, অনেক ক্ষত্রিয় রাজাও মৃগয়া করতে যান। সেখানে তুই অনায়াসে আর একটি স্বামী জুটিয়ে নিতে পারবি।

 খর-দাদার সঙ্গে দণ্ডকারণ্যে গেলাম। সত্যিই ভাল জায়গা, বিশেষ করে জনস্থান অঞ্চল, যেখানে আমরা বসতি করলাম। কিন্তু বড়দার সব কথা সত্যি নয়, ক্ষত্রিয় সেখানে কেউ আসত না, ঋষিও খুব কম, রাক্ষসের ভয়ে জঙ্গলে লুকিয়ে তপস্যা করত। তবে খাবার জিনিসের অভাব নেই, বিস্তর আম কাঁঠাল কলা নারকেল, মধুও প্রচুর, নানা জাতের হরিণও পাওয়া যায়।

 পুষ্কলা প্রশ্ন করলেন, আচ্ছা পিসীমা, তুমি ঋষি খেয়েছ?

 মুখে আবার পঁচিশ খিলি পান পুরে শূর্পণখা বললেন, আমাদের বাপ মহামুনি বিশ্রবা ঋষি-খাওয়া পছন্দ করতেন না। ছোটলোক রাক্ষসরা নরমাংস ভালবাসে, কিন্তু আমরা রাজবংশের মেয়েপুরুষ বড় একটা খেতুম না। তবে কোনও মানুষের উপর বেশী চটে গেলে তাকে ভক্ষণ করতুম আর পূজো-পার্বণে