পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্মৃতিকথা
১৬৯

আর তোকে বলতে হবে না। চোখে কাজল, কপালে তেলপোকার টিপ, গালের রং যেন দুধে আলতা, ঠোঁট পাকা তেলাকুচো, খোঁপায় শিমুল ফল, কানে ঝুমকো জবা, গলায় সাতনরী মুক্তোর মালা, পরনে নীল শাড়ি, বুকে সোনালী কাঁচুলি, আর এক গা গহনা। দেখলে পুরুষের মুণ্ডু ঘুরে যায়। মুদ গল ঋষির আশ্রমে যখন পৌঁছলুম তখন তিনি বেদপাঠ করছিলেন। তাঁকে দেখেই মুগ্ধ হয়ে গেলুম, আমার আগেকার স্বামীর চাইতে ঢের ভাল দেখতে। আমি ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম করলে তিনি বললেন, ভদ্রে, তুমি কে? কি প্রয়োজনে এসেছ? আমি উত্তর দিলুম, তপোধন, আমি রাজকন্যা শুক্তিনখা—

 পুষ্কলা বললেন, ও নাম আবার কোথা থেকে পেলে?

 —আসল নামটা ভদ্রলোকের কাছে বলতে ইচ্ছে হল না। বাবা বিশ্রবার যেমন বুদ্ধি, তাই একটা বিশ্রী নাম রেখেছেন। শুক্তিনখা—কিনা ঝিনুকের মতন যার নখ। তার পর আমি বললুম, দ্বিজশ্রেষ্ঠ, আমি কাছেই থাকি। তিন মাস ধরে বিভীতক ব্রত পালন করছি, অহোরাত্রে শুধু একটি বিভীতক ফল অর্থাৎ বয়ড়া আহার করি। কাল আমার ব্রতের পারণ হবে, সেজন্যে একটি ব্রাহ্মণভোজন করাতে চাই। আপনি কৃপা করে কাল মধ্যাহ্নে এই দাসীর কুটীরে পদধূলি দেবেন।

 —আচ্ছা পিসীমা, সেই কচি ঋষিটিকে দেখে তোমার নোলা সপসপিয়ে উঠল না?

 —তুই কিছুই বুঝিস না। যার প্রতি অনুরাগ হয় তাকে