ছাড়া শাস্ত্রে বলে, স্ত্রীজাতি স্বাতন্ত্র্যের যোগ্য নয়। তুমি অবলা নারী, পিতা মাতার অধীন, তাঁরাই তোমাকে পাত্রস্থ করবেন।
আমি বললুম, আমার পিতা মাতা না থাকারই মধ্যে, তাঁরা আমার খোঁজ নেন না। আমার আসল পরিচয় শুনুন, আমি হচ্ছি লঙ্কেশ্বর রাবণের ভগিনী।
চমকে উঠে ঋষি বললেন, অ্যাঁ, তুমিই শূর্পণখা? যতই রূপবতী হও রাক্ষসীকে আমি বিবাহ করতে পারি না। শুনেছি শূর্পণখা অতি ভয়ংকরী, নিশ্চয় তুমি মায়ারূপ ধারণ করে এসেছ।
আমি বললুম, ওহে মুদ্গল, রূপ তো নিতান্তই বাহ্য। আমি যদি মায়াবলে আমার বাহ্য রূপ বর্ধিত করি তাতে অন্যায়টা কি? তোমার ভয় নেই। এই মনোহর রূপেই আমি সর্বদা তোমাকে দর্শন দেব, কেবল রাত্রিতে শয়নকালে রূপসজ্জা বর্জন করব, নইলে আমার ঘুম হবে না। প্রদীপ নিবিয়ে অন্ধকারে আমি তোমার পাশে শোব।
—তোমাকে বিশ্বাস কি? যদি রাত্রিতে তোমার ক্ষুধার উদ্রেক হয় তবে হয়তো আমাকে ভক্ষণ করে ফেলবে।
—ভয় নেই, যাকে তাকে আমি খাই না, আর পতি তো নিতান্ত অভক্ষ্য। শোন মুদ্গল, আমাকে বিবাহ করলে অতুল ঐশ্বর্য পাবে, দশানন রাবণ যাঁর ভয়ে ত্রিভুবন কম্পমান, মহাকায় মহাবল কুম্ভকর্ণ, আর সুবুদ্ধি ধর্মপ্রাণ বিভীষণ—এই তিনজনকে শ্যালকরপে পেয়ে ধন্য হবে।
মুদ্গল ঋষি দেখতে বোকার মতন হলেও অত্যন্ত একগুঁয়ে,