পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
নীল তারা ইত্যাদি

দিদিও বছর খানিক চেষ্টা করলে পারবেন। কেন যে লোকে কবিদের খাতির করে—

 নমিতা বললেন, বাজে কথা রাখুন। কার সঙ্গে প্রেম হয়েছিল? অত চট করে সারলই বা কি করে? প্রতিদ্বন্দী আপনাকে ঠেঙিয়েছিল নাকি?

 —ধৈর্য ধরুন, যথাক্রমে সবই শুনবেন। প্রেমে পড়ার চারপাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই কাবু হয়েছিলাম। আহারে রুচি নেই, মাথা টিপটিপ করে, বুক ঢিপঢিপ করে, ঘুম মোটেই হয় না, লেখাপড়া চুলোয় গেল, চব্বিশ ঘণ্টা শয্যাশায়ী। মা বললেন, হাঁরে সিধু তোর হয়েছে কি? কপালটা যেন ছ্যাঁকছ্যাঁক করছে। বাবা ডাক্তার ডাকালেন। নাড়ী জিব বুক পেট সব দেখে ডাক্তার বললেন, ডেংগু মনে হচ্ছে, ভয়ের কারণ নেই, নড়াচড়া বন্ধ রাখবে, লিকুইড ডায়েট চলবে। এক আউন্স ক্যাস্টর অয়েল এখনই খাইয়ে দিন, আর দশ গ্রেন কুইনীন নেবুর রস দিয়ে জলে গুলে এবেলা একবার ওবেলা একবার। মুখেটা তেতো রাখা দরকার।

 রামদাস কাব্যসাংখ্যবেদান্তচুঞ্চু তখন ইউনিভার্সিটিতে প্রাচ্যদর্শনের অধ্যাপক ছিলেন। এখন তিনি নাগপুরে আছেন। বয়স বেশী নয়, আমার চাইতে ছ-সাত বছরের বড়। সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতরা একটু রসিক হয়ে থাকেন। রামদাসও রসিক লোক, ছাত্রদের সঙ্গে ইয়ারকি দিতেন, কিন্তু সকলেই তাঁকে খুব শ্রদ্ধা করত। আমাকে তিনি বিশেষ রকম স্নেহ করতেন, কারণ বিদ্যায় আর রূপে আমিই ক্লাসের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ছিলুম।