পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিলোত্তমা
২৩

 নমিতা বললেন, জন্ম ইস্তক বিদ্যের জাহাজ ছিলেন তা না হয় মানলুম, কিন্তু রূপ আবার কোথায় পেলেন? এই তো গুলিখোরের মতন চেহারা, গরুর মতন ড্যাবডেবে চোখ, শুওরকুঁচির মতন চুল—

 —সকলেই আপনার মতন অন্ধ নয়, সমঝদার রূপদর্শী লোক ঢের আছে। দু দিন আমাকে ক্লাসে দেখতে না পেয়ে চুঞ্চু মশায় জিজ্ঞাসা করলেন, সিদ্ধিনাথ কামাই করছে কেন? ছাত্ররা বলল, তার ভারী অসুখ। আমার বাবার সঙ্গে তাঁর বাবার বন্ধুত্ব ছিল। সেই সূত্রে চুঞ্চু মশায় মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে আসতেন। অসুখ শুনে আমাকে দেখতে এলেন।

 নমিতা বললেন, বকবক করে শুধু রাজে কথা বলছেন। প্রেমে পড়লেন অথচ প্রেমপাত্রীটির কোনও খবর নেই। তার নাম কি, পরিচয় কি, দেখতে কেমন, সব বৃত্তান্ত খুলে বলুন, আপনার রামদাস চুঞ্চুর কথা শুনতে চাই না।

 —ব্যস্ত হবেন না, কি জাতি কি নাম ধরে কোথায় বসতি করে সবই শুনতে পাবেন। মেয়েটি দেখতে কেমন তা জানবার জন্যে ছটফট করছেন, নয়? আচ্ছা এখনই বলে দিচ্ছি —অতি সুশ্রী গৌরী তন্বী, আপনার মতন গোবদা নয়, হিংসুটেও নয়। গোপাল কি দেখে যে আপনার প্রেমে মজেছে তা বুঝতেই পারি না।

 —বোঝবার কোনও দরকার নেই, পরচর্চা না করে নিজের কথা বলুন।