পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিলোত্তমা
২৫

 চুঞ্চু মশায় বললেন, যদি নাগালের বাইরেই হয় এবং কোনও আশা না থাকে তবে বৃথা তার চিন্তা করছ কেন? মন থেকে একবারে মুছে ফেল।

 —চেষ্টা তো করছি, কিন্তু পারছি না যে।

 —আচ্ছা তার ব্যবস্থা আমি করছি। আগে তার পরিচয় দাও।

 আমি সবিস্তারে পরিচয় দিলুম। তাকে দিনেমায় দেখেছি, তিলোত্তমা ছবিতে নায়িকার পার্টে—

 নমিতা বললেন, আরে রাম রাম, ছি ছি, এত ভনিতার পর সিনেমার অ্যাকট্রেস! ইস্কুলের চ্যাংড়া ছেলেরাই তো সে রকম প্রেমে পড়ে। ডক্টর সিদ্ধিনাথ বকবক্তার নজর অত ছোট তা মনে করি নি, উঁচুদরের কিছু আশা করেছিলুম। অন্তত একটি পিস্তলওয়ালী অগ্নিদিদি, কিংবা নাটোরের বনলতা সেন।

 অসিতা বলল, অমন আশা তোমার করাই অন্যায় দিদি, এঁর তো তখন কম বয়স, ডক্টর বা বকবক্তা কোনও খেতাবই পান নি।

 সিদ্ধিনাথ বললেন, ছি ছি করবার কোনও কারণ নেই আমার মনোরথে আকাশের নক্ষর জোতা ছিল। তিলোত্তমা ছবিতে সে নায়িকা সাজত, তার নিজের নামও তিলোত্তমা। তার বাপ আর ঠাকুদা বাঙালী, ঠাকুমা বর্মী, মা অ্যাংলো ইণ্ডিয়ান, দিদিমা ইংরেজ, দাদামশায় পঞ্জাবী। অ্যাভারেজ বাঙালী মেয়ে মোটেই সুশ্রী নয়। জারুল কাঠের মতন গায়ের রং, ছোট ছোট চোখ, এ কান থেকে ও কান পর্যন্ত মুখের হাঁ—যেন ইঁদুর ধরা