জাঁতিকল, মোটা ঠোঁট, থুতনি এতটটুকু। বিশ্বাস না হয় তো আরশিতে মুখে দেখবেন!
নমিতা বললেন, বাঙালী পুরুষদের চেহারা কেমন তা শুনবেন? চোয়াড়ে গড়ন, আবলুস কাঠের মতন রং—
সিদ্ধিনাথ হাত নেড়ে বললেন, থামুন থামুন যা বলবার গোপালকে আড়ালে বলবেন, অন্যের কাছে পতিনিন্দা মহাপাপ। যা বলছিলুম শুনুন। তিলোত্তমার দেহে চার জাতের রক্ত মিশেছিল, সেজন্যই সে অসাধারণ সুন্দরী। গোড়ালি পর্যন্ত চুল, চাঁপা ফুলের মতন রং—
অসিতা বলল, রং কি করে টের পেলেন সার? তখন তো টেকনিকলার হয় নি।
রংটা অনুমান করেছিলুম। লম্বা ছিপছিপে গড়ন, পক্কবিম্বাধরোষ্ঠী, চকিতহরিণীপ্রেক্ষণা, পীনস্তনী, নিরিড়নিতম্বা। কালিদাস থাকে বলেছেন—যুবতিবিষয়ে বিধাতার আদ্যা সৃষ্টি।
নমিতা বললেন, বিধাতার সৃষ্টি থোড়াই, আপনি আদেখলে হাঁদা ছিলেন তাই আসল রূপ টের পান নি। রং সুর্মা পরচুল তুলো আর খড় দিয়ে কি গড়া যায় তার কোনও আইডিয়াই আপনার নেই।
—হুঁ, রামদাস চুঞ্চুও তাই বলেছিলেন বটে। তার পর শুনুন। তিলোত্তমার গলার আওয়াজ এত মিষ্টি যে তা বলবার নয়।
—উপমা খুঁজে পাচ্ছেন না? রুপুলী কণ্ঠস্বর বলা চলবে?