পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
নীল তারা ইত্যাদি

দিলাম, কিন্তু তার পর কি করব? কাল সারা রাত আমি ঘুমুতে পারি নি। বড় বড় দেওয়ানী মামলার রায় আমি অক্লেশে দিয়েছি, ফাঁসির হুকুম দিতেও আমার বাধে নি। কিন্তু এরকম তুচ্ছ বেয়াড়া ব্যাপারে কখনও জড়িয়ে পড়ি নি। তোমার ঠাকুদ্দা প্রিয়নাথবাবুকে আমি কি করে বলব—মশায়, আপনার অবুঝ গিন্নী বেচারীকে কষ্ট দেবেন না, প্রভাবতীকে হাঁকিয়ে দিন?

 তিরি বলল, আপনাকে কিছুই করতে হবে না সার, শুধু সাক্ষী হয়ে থাকবেন। কাল আপনাকে এক তরফের ইতিহাস বলেছি, আজ অন্য তরফের ব্যাপারটা শুনুন।

 —অন্য তরফ আবার কে? তোমার ঠাকুমা নাকি?

 —আজ্ঞে হাঁ। আমি বিস্তর রিসার্চ করে যা আবিষ্কার করেছি তাই বলছি শুনুন। ঠাকুদ্দা প্রিয়নাথের সঙ্গে বিয়ে হবার আগে ঠাকুমা কনকলতার একটি খুব ভাল সম্বন্ধ এসেছিল, বাগবাজারের হারু মিত্তিরের ছেলে গৌরগোপাল মিত্তির, এখন যিনি অল্ডারম্যান হয়েছেন। আমার ঠাকুদ্দা সুপুরুষ বটে, কিন্তু গৌরগোপাল হচ্ছেন সুপার-সপুরুষ, মূর্তিমান কন্দর্প। তাঁর বয়স যখন ঊনিশ-কুড়ি তখন ঠাকুমাকে একবার লুকিয়ে দেখেছিলেন এবং তৎক্ষণাৎ সেই বারো বছরের নোলক-পরা বোধোদয়-পড়া খুকীর প্রেমে পড়েছিলেন। তখন ওইরকমই রেওয়াজ ছিল কিনা। তাঁর বাবা হারু মিত্তিরও মেয়েটিকে পছন্দ করলেন আর ছ হাজার টাকা পণে ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজী হলেন। সব ঠিক, এমন সময় গৌরগোপালের আর এক সম্বন্ধ এল