পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবলাল
৬৫

বললাম, কি হয়েছে মশায়?

 এই সময় ভিড়ের মধ্য থেকে হাততালির শব্দ উঠল, সঙ্গে সঙ্গে জন কতক ধমক দিল—চোপ, চোপ, গোল করবে না।

 চুপি চুপি আবার প্রশ্ন করলাম, কি হয়েছে মশায়?

 ভদ্রলোক বললেন, হয়েছে আমার মাথা। বেলা সাড়ে চারটের মধ্যে শ্যামবাবুর বাড়িতে পৌঁছবার কথা, তা দেখুন না, ব্যাটারা পথ বন্ধ করে খামকা দেরি করিয়ে দিল।

 একজন সৌম্যদর্শন মধ্যবয়স্ক ভদ্রলোক আমার কাছে এলেন। তাঁর মাথার টিকি, কপালে বিভূতির ত্রিপুণ্ড্রক, মুখে প্রসন্ন হাসি। আমাকে বললেন, কি হয়েছে জানতে চান? আসুন আমার সঙ্গে। ও তিনু, ও কেষ্ট, একটু পথ করে দাও তো বাবারা।

 তিনু আর কেষ্ট দুই স্বেচ্ছাসেবক কনুইএর গুঁতো দিয়ে পথ করে দিল, আমরা এগিয়ে গেলাম। সঙ্গী ভদ্রলোক বললেন, আমার নাম হরদয়াল মুখুজ্যে, এই পাড়াতেই বাস। মশায়ের নাম?

 —রামেশ্বর বসু। আমিও কাছাকাছি থাকি, বাদুড়বাগানে।

 ভিড় ঠেলে আরও কিছু দূর আমাকে টেনে নিয়ে গিয়ে হরদয়ালবাবু আঙুল বাড়িয়ে বললেন, দেখতে পাচ্ছেন?

 দেখলাম দুটো ষাঁড় লড়াই করছে। গর্জন নেই, নড়ন চড়ন নেই, কিন্তু শীতল সময় বলা যায় না, নীরব উষ্মা দুই যোদ্ধারই বিলক্ষণ আছে। একটি ষাঁড় প্রকাণ্ড, দেখেই বোঝা যায় বয়স হয়েছে, ঝুঁটি আর শিং খুব বড়, গলা থেকে থলথলে ঝালর নেমে