পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
নীল তারা ইত্যাদি

প্রায় মাটিতে ঠেকেছে। অন্যটি মাঝারি আকারের, বয়সে তরুণ হলেও বেশ হৃষ্টপুষ্ট আর তেজস্বী। দুই ষাঁড় শিং জড়াজড়ি করে মাথায় মাথা ঠেকিয়ে পরস্পরকে ঠেলে ফেলবার চেষ্টা করছে। টগ-অভ-ওআরের উলটো, টানাটানির বদলে ঠেলাঠেলি।

 হরদয়াল বললেন, প্রায় এক ঘণ্টা এই দ্বন্দযুদ্ধ চলছে। প্রবীণ ষাঁড়টির নাম শিবলাল, আর তরুণটির নাম লোহারাম। স্বয়ং শিব কর্তৃক লালিত সেজন্যে শিবলাল নাম। লোহারাম হচ্ছে এই পাড়ার ষাঁড়, লোহাওয়ালারা ওকে খেতে দেয়। লড়াই শুরু হতেই ওরা ওর ওপর বাজি ধরেছে। ওদের বিশ্বাস, ওই নওজওআন লোহারামের সঙ্গে বুড্‌ঢা শিবলাল পেরে উঠবেন না। কিন্তু পাড়ার বাঙালীরা জানে যে শেষ পর্যন্ত শিবলালেরই জয় হবে।

 গান্ধী টুপি আর লম্বা কোট পরা এক ভদ্রলোক হরদয়ালের কথা শুনছিলেন। তিনি একটু ভাঙা বাংলায় বললেন, এ হরদয়ালবাবু, এর ভিতর প্রাদেশিকতা আনবেন না। এই লড়াই বিহার আর বঙ্গালের মধ্যে হচ্ছে না।

 হরদয়াল বললেন, নিশ্চয়ই নয়। লোহারাম এই পাড়ার ষাঁড়, বিহারী কালোয়াররা ওকে খেতে দেয়, সেজন্যে লোহাৱামকে বিহারী বলা যেতে পারে। কিন্তু শিবলাল বাঙালী নন, সর্বভারতীয় কস্মপলিটান ষণ্ড। এঁর জন্মভূমি কোথায় তা কেউ জানে না। তবে এঁর সম্বন্ধে আমার একটা থিওরি আছে; এঁর ইতিহাসও আমি কিছু কিছু জানি।