পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবলাল
৭১

বেলায় শহরের নানা স্থানে পর্যটন করে বেড়ান।

 আমি বললাম, চমৎকার ইতিহাস। আচ্ছা, বসুন আপনি, আমি এখন উঠি।

 হরদয়ালবাবু হাত নেড়ে বললেন, আরে এখনই উঠবেন কি? শিবলালজীর যা শ্রেষ্ঠ কীর্তি, মহত্তম অবদান, তাই বাকী রয়েছে। বলছি শুনুন। কামধেনু ডেয়ারি ফার্মের নাম শুনেছেন?

 —আজ্ঞে হাঁ। সেখান থেকেই তো আমার বাড়িতে দুধ আসত। শেষ কালে ওদের কুবুদ্ধি হল, মোষের দুধ, গুঁড়ো দধ, জল, এইসব মিশিয়ে খদ্দের ঠকাতে লাগল। তখন তাদের দুধ নেওয়া বন্ধ করলাম।

 —প্রায় দু বছর হল কামধেনু ডেয়ারি ফেল হয়েছে। কেন ফেল হল জানেন? ওই বাবা শিবলালের কোপে পড়ে। আশ্চর্য ব্যাপার। কামধেনু ডেয়ারির তিন শ গরু ছিল, ঢাকুরের ওদিকে বড় বড় গোয়ালে তারা থাকত। সকালে দুধ দোহার পর আট-দশ জন রাখাল তাদের গড়ের মাঠে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিত। দিন ভর তারা ঘাস খেত, তার পর বেলা পড়লে রাখালরা তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যেত।

 সেই সময় শিবলাল চুঁচড়ো থেকে কালীঘাটে আগমন করেন। উনি সমস্ত দিন টোটো করে ঘুরতেন, সন্ধ্যের কিছু আগে গড়ের মাঠে গিয়ে খানিকক্ষণ নিরিবিলিতে বায়ুসেবন করতেন। একদিন কি খেয়াল হল, বেলা তিনটের সময় মাঠে উপস্থিত হলেন। দেখলেন, এক পাল নধর গরু চরে বেড়াচ্ছে। শিবলাল প্রীত হয়ে