পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
নীল তারা ইত্যাদি

নাসিকা উত্তোলন করে কয়েকবার হর্ষসূচক ঘোঁত ঘোঁত ধ্বনি করলেন। আর যায় কোথা! সেই আহ্বান শুনে কামধেনু ডেয়ারির তিন শ গরু হাম্বা রব করে ছুটে এসে শিবলালকে বেষ্টন করল। রাসমণ্ডলের মধ্যবর্তী গোপিকাবেষ্টিত শ্রীকৃষ্ণের ন্যায় শিবলাল শোভমান হলেন। ক্ষণকাল পরে তিনি মাঠ ত্যাগ করে সবেগে চললেন, সমস্ত গরু অভিসারিকা হয়ে তাঁর অনুসরণ করল। হেস্টিংস ছাড়িয়ে ডায়ামণ্ড হারবার রোড দিয়ে শিবলালের অনুগামিনী ধেনুবাহিনী মার্চ করে চলল, রাখালরা লাঠি নিয়ে পশ্চাদধাবন করল। কিন্তু তিন শ গরু যদি স্বেচ্ছায় একটি ষাঁড়ের সঙ্গে ইলোপ করে তবে তাদের আটকাবে কে? বেগতিক দেখে কয়েক জন রাখাল ফিরে গিয়ে কর্তাদের খবর দিল। তখন তিন জন ডিরেক্টর— গোবরচন্দ্র ঘোষ, গোবর্ধনলাল মাথুর, আর হাজী কোরবান আলী মোটরে চড়ে ছুটলেন, একটা লরিতে তাঁদের অনুচররাও চলল। মগরাহাটের কাছাকাছি এসে দেখলেন, একটি মাঠে শিবলালজী তাঁর সঙ্গিনীদের সঙ্গে ঘাস খাচ্ছেন। কর্তারা স্থির করলেন, ওই ষাঁড়টিকে কাবু না করলে তাঁদের গোধন উদ্ধার করা যাবে না। তাঁদের হুকুমে জনকতক সাহসী লোক লাঠি নিয়ে শিবলালজীকে আক্রমণ করল। তখন সমস্ত গরু একযোগে শিং বাগিয়ে তেড়ে এল, ডেয়ারির লোকরা ভয় পেয়ে পালাল। কর্তারা হতাশ হয়ে ফিরে গেলেন, কয়েকজন রাখাল গরুদের ওপর নজর রাখবার জন্যে সেখানে রয়ে গেল।

 তার পর ডেরারির কর্তারা আরও তিন-চার দিন গরু ফিরিয়ে