পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নীলকণ্ঠ

লেকের ধারে তিন বার চক্কর দিয়েছি, সন্ধ্যা হয়ে এল। বাড়িমুখো হব এমন সময় কাতর কণ্ঠস্বর কানে এল—ও মশায়, দয়া করে আমার কাছে একটু বসুন না।

 ভদ্রলোক একটা বেঞ্চে একা বসে আছেন। রোগা চেহারা, চুল উস্ক খুস্ক, দাড়িও সম্প্রতি কামান নি। বয়স পঁয়ত্রিশ থেকে চল্লিশের মধ্যে। মুখ দেখে মনে হল শারীরিক বা মানসিক কষ্ট ভোগ করছেন। আমি তাঁর পাশে বসতেই বললেন, আপনার নাম আর ঠিকানা?

 আর কেউ হঠাৎ এমন প্রশ্ন করলে ধমক দিতাম, কিন্তু এঁর উপর রাগ হল না। বললাম, আমার নাম সুশীলচন্দ্র চন্দ্র, কাছেই থাকি, একুশ নম্বর কার্তিক নশকর লেন। কেন বললে তো?

 ভদ্রলোক নোটবুক বার করে একটা পাতা ছিঁড়ে খচখচ করে কিছু লিখলেন। তার পর কাগজটি মুড়ে আমাকে বললেন, ধরুন, পকেটে রেখে দিন, হারাবেন না যেন।

 আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, এ কাগজ নিয়ে আমি কি করব? আপনার নাম কি মশায়?

 —আমার নাম শ্রীনীলকণ্ঠ তবলাদার, হাল ঠিকানা প্লট নম্বর পঞ্চান্ন, কপিল রোড এক্সটেনশন, ডাক্তার বঙ্কিম পালের বাড়ি।